Saturday 23 January 2016


কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়
কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়
১. কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয়
চাওয়া ও দুয়া করাঃ
কবররে আযাব থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে
নিয়মিত দুয়া করতে হবে, বিশেষ করা দুয়া মাসুরাতে
বেশি বেশি দুয়া করতে হব। যেই দুয়া মাসুরা পড়তে
হবেঃ
দুয়া মাসুরা অর্থ হচ্ছে হাদীসে বর্ণিত দুয়া যেইগুলো
রাসুল সাঃ করতেন। আমাদের দেশের মানুষ মনে
করে, দুয়া মাসুরা শুধু একটাই (আল্লাহুম্মা ইন্নি
জালামতু নাফসান যুলমান কাসিরাও...), এটা ভুল।
নামাযে সালাম ফিরানোর আগে পড়তে হয় এমন
অনেক সুন্দর সুন্দর দুয়া আছে সহীহ হাদীসে। কারণ,
ফরয নামাযে আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ পড়ার পরে,
সালাম ফেরানোর আগে দুয়া বেশি কবুল করা হয়।
দুয়া মাসুরা এক বা একের অধিক, যত ইচ্ছা পড়া যায়।
এইগুলো মুখস্থ করে আমল করা উচিত।
৪টি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
দুয়া মাসুরা আছে। কবরের আজাব, জাহান্নামের
আজাব, দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর সময়ের ফেতনা ও
দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য
দুয়া মাসুরাঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইগুলো থেকে বাঁচার জন্য ফরয,
নফল বা সুন্নত, যেকোনো সালাতে তাশাহুদ ও দুরুদের
পরে সালাম ফিরানোর আগে এই দুয়া পড়তে
বলেছেন।
ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ، ﻭَﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ، ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ
ﻭَﺍﻟْﻤَﻤَﺎﺕِ، ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴْﺢِ ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ .
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিন
আ’যাবিল ক্বাবরি ওয়া মিন আ’যাবি জাহান্নাম,
ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহ’ইয়া, ওয়াল্ মামাতি,
ওয়ামিং সাররি ফিতনাতিল্ মাসীহি’দ্-দাজ্জাল।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আযাব
থেকে রক্ষা করো,আমাকে জাহান্নামের আযাব,
এবং দুনিয়ার ফিৎনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং
দাজ্জালের ফিৎনা থেকে রক্ষা করো।
বুখারী ২১০২, মুসলিম ১/৪১২, হিসনুল মুসলিম, পৃষ্ঠা –
৯০।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দুয়া মাসুরা হিসেবে এই দুয়া
পড়তে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।
২. কবীরা গুনাহ, যেইগুলো বড়বড় পাপকাজ, সেইগুলো
যে কারনে ক্বুরান ও সহীহ হাদীসে কঠিন শাস্তির
ভয় দেখানো হয়েছে, সেইগুলো বর্জন করা ও
আল্লাহর বেঁধে দেওয়া ফরয ও ওয়াজিব হুকুম পালনে
যত্নবান হওয়া।
৩. সুরা মুলক
প্রতিদিন সুরা মুলক তেলাওয়াত করলে আশা করা
যায় আল্লাহর রহমতে কবরের আজাব ও কেয়ামতের
দিন শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ “যে
ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা তাবারাকাল্লাযী
বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক) তেলাওয়াত করবে
আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর যামানায় এই সুরাটিকে আমরা
“আল-মা’আনিয়াহ” বা সুরক্ষাকারী বলতাম। যে
রাতের বেলা এই সুরাটি পড়বে সে খুব ভালো একটা
কাজ করলো”।
সুনানে আন-নাসায়ী ৬/১৭৯, শায়খ আলবানীর মতে
হাদীসটি হাসান সহীহ, সহীহ আত-তারগীব ওয়াল
তারহীব ১৪৭৫।
এই সুরা প্রত্যেকদিন রাতের বেলা তেলাওয়াত
করলে কিয়ামতের দিন শাফায়াত করে জান্নাতে
নিয়ে যাবে ইন শা’ আল্লাহঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেনঃ “কুরআনে এমন একটা
সুরা আছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা
একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে
ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো
তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)”।
সুনানে আত-তিরমিযী ২৮৯১, সুনানে আবু দাউদ ১৪০০,
মুসনাদের আহমাদ, ইবনে মাজাহ ৩৭৮৬।
ইমাম তিরমিযী বলেছেন হাদীসটি হাসান, ইবনে
তাইমিয়্যা বলেছেন সহীহ মাজমু ২২/২২৭, শায়খ
আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহ তিরমিযী ৩/৬,
সহীহ ইবনে মাজাহ ৩০৫৩।
বিঃদ্রঃ এইখানে তেলাওয়াত মানে শুধু তোতা
পাখির মতো রিডিং পড়ে যাওয়া না। এই প্রসংগে
সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ডের আলেমদের
ফতোয়া হচ্ছেঃ “এই হাদীসগুলোর আলোকে বলা
যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সুরা মুলক
বিশ্বাস করবে ও তেলাওয়াত করবে, এই সুরাতে যে
শিক্ষা দেওয়া আছে তা গ্রহণ করবে এবং যে হুকুম
আহকাম দেওয়া আছে সেইগুলো মেনে চলবে
কেয়ামতের দিন তার জন্য এই সুরাটি শাফায়াত
করবে”।

No comments:

Post a Comment