অন্যের প্রতি ঘৃণা বা রাগ।
ইমরান রহমান একজন স্কুল শিক্ষক। ছাত্রদের সাথে
বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এবং শিক্ষাদানের অভিনব
কৌশলের জন্য তিনি ছাত্রমহলে বেশ জনপ্রিয়।
একদিন ক্লাশে এসে ছাত্রদের বললেন, “আমি
তোমাদের সাথে একটা গেম খেলতে চাই, খেলবে
তোমরা গেম?” ছাত্ররা তো মহাখুশি। গেম কে না
খেলতে চায়! সবাই এক বাক্যে রাজী। গেম খেলবে
তারা ।
“ঠিক আছে। আগামীকাল একটা ব্যাগে করে কিছু
টমেটো নিয়ে আসবে তোমরা। ওকে?”
ছাত্ররা ব্যাগভর্তি টমেটো নিয়ে এলো। “এখন কি
করবো স্যার?” ছাত্রদের উৎসুক জিজ্ঞাস ।
“তোমরা যাকে/যাদের সহ্য করতে পারনা বা ঘৃণা কর
তাদের নাম একটা একটা করে টমেটোগুলোর গায়ে
লেখ”।
ছাত্ররা ব্যাপক উৎসাহে টমেটোর গায়ে নাম
লিখতে থাকলো। কেউ ১ টা, কেউ ২ টা, কেউবা ৫ টা
পর্যন্তু টমেটোর গায়ে নাম লিখলো।
“যে যতগুলো টমেটোর গায়ে নাম লিখেছো সেগুলো
আবার নিজ নিজ ব্যাগে রাখ। এই টমেটোগুলো
আগামী ১ সপ্তাহের জন্য সবসময় তোমাদের সাথেই
রাখবে। ঘুম, খাওয়া, পড়া যা-ই কর না কেন সব সময়ই
এই টমেটো গুলো যেন তোমাদের পাশেই থাকে।”
এভাবে কয়েকদিন যাবার পর টমেটোগুলো থেকে
প্রচণ্ড দূর্গন্ধ আসছে বলে অভিযোগ করলো ছাত্ররা।
উপরন্তু যাদের ব্যাগে ৫ টা টমেটো ছিল তারা বেশ
ঝামেলায় পড়ে গেল। ৫ টা টমেটোর ওজন
একেবারেই কম না। ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য সেটা
বহন করা বেশ কষ্টকর হয়ে গেল। কাজেই যে উৎসাহ
নিয়ে ছাত্ররা গেমটা আরম্ভ করেছিল
তা বিরক্তিতে পরিণত হলো দিনেদিনে। অবশেষে ১
সপ্তাহ শেষ হলো। ছাত্ররা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল এই
গেমের অবসানে।
স্যার জিজ্ঞেস করলেন, “এই এক সপ্তাহ কেমন
কাটলো তোমাদের?” ছাত্ররা তাদের হতাশা ও
অসুবিধার কথা খুলে বললো স্যারকে। টমেটোর
দূর্গন্ধ ও ওজন তাদের যে ভোগান্তিতে ভুগিয়েছে
তা বিস্তারিত জানালো।
স্যার তাদের গেমটার গোপন অর্থ খুলে বললেন। এই
ঘটনাটা অনেকটা হৃদয়ে কারও প্রতি রাগ বা ঘৃণা
বয়ে বেড়ানোর ঘটনার মতো। ঘৃণা বা রাগ ধীরে
ধীরে তোমাদের হৃদয়কে দূষিত ও কলুষিত করে
তোলে, যেটা তোমাদের সব সময়ই বয়ে বেড়াতে হয়।
মাত্র ১ সপ্তাহ পঁচা টমেটো তোমাদের সাথে বয়ে
নিয়ে বেড়ানোতেই তা তোমাদের জন্য অসহ্য হয়ে
উঠেছে। পঁচা টমেটোর দূর্গন্ধ ও ওজন তোমাদের
অতিষ্ঠ করে তুলেছে। কাউকে যদি তোমরা ঘৃণা কর,
অনেকদিন তার প্রতি রাগ পুষে রাখ, তাহলে
তোমাদের হৃদয়ের কি অবস্থা হবে কল্পনা করতে
পার ?
শিক্ষাঃ-
হৃদয় থেকে অন্যের প্রতি ঘৃণা বা রাগ মুছে ফেল
যাতে সারা জীবন কোন পাপ বয়ে নিয়ে বেড়াতে
না হয়। ক্ষমা মহৎ গুন। ক্ষমা করার গুন মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করে।
No comments:
Post a Comment