Friday 23 September 2016

আমরা ভুলে যাই।

ভাগ্য তোমার হাতে নেই, কিন্তু সিদ্ধান্ত তোমার হাতে। ভাগ্য সিদ্ধান্ত নেয় না, কিন্তু তোমার সিদ্ধান্তই তোমাকে ভাগ্য এনে দিতে পারে৷ https://m.facebook.com/ReadTheHadithOrCreateABeautifulLife/

Thursday 5 May 2016

জয়ের যে পরিমাণ টাকা আছে তা দিয়ে ২০টা পদ্মাসেতু হবে।

Saturday 13 February 2016

ভালবাসা দিবস কেন বর্জন করব ?
যে কোনো দিবসকে আমরা গ্রহণ করব না বর্জন করব,
সে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রধানত দুটো বিষয়
বিবেচনা করা উচিৎ ।
#এক . দিবসটার সাথে ধর্মীয় কোনো চেতনা জড়িত
কিনা । থাকলে তা ইসলামের বিরুদ্ধে নাকি পক্ষে।
পক্ষে হলে তার প্রমাণ রাসূল স. বা তাঁর
সাহাবীদের থেকে আছে কিনা ।
#দুই . দিবসটি পালনে ইসলাম বিরোধী কিছু হচ্ছে
কিনা । হলে সেটা কোন পর্যায়ের ।
ভালবাসা দিবস গ্রহণ-বর্জন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত
নেয়ার আগেও বিষয় দুটি বিবেচনায় আনা যেতে
পারে ।
#প্রথম_বিষয় : দিবসটির সাথে ধর্মীয় চেতনা জড়িত
কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা দেখি, দিবসটি
জনৈক খ্রীস্টান সাধুর স্মরণে পালন করা হয় । যার
ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি কারাবন্দী
অবস্থায় একটি মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করায়
তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে হত্যা
করেন । সেই থেকে তাকে স্মরণ করে ভ্যালেন্টাইনস
ডে পালন করা হয় ।
যদিও পরবর্তীতে এতে নষ্টামি যোগ হওয়ায় ১৭৭৬
সালে ফ্রান্স সরকার এই দিনটি পালন নিষিদ্ধ করে ।
পরে আবার অনেকটা করপোরেট জায়গা থেকেই বলা
যায় দিনটি পুনরায় জনপ্রিয়তা ফিরে পায় ।
বর্তমানে দিনটিকে কেন্দ্র করে চলে বিলিয়ন
ডলারের বাণিজ্য ।
( উইকিপিডিয়া http:// en. wiki pedia. org /wiki/ ­
Valentine%27s_Day )
#দ্বিতীয়_বিষয় : দিবসটি পালনে ইসলাম বিরোধী
কিছু হয় কিনা । আমরা জানি বর্তমানে দিবসটিকে
কেন্দ্র করে যেসব বিষয় চলে, তার কোনোটিই
ইসলাম সমর্থন করে না ।
ভালবাসা আদান-প্রদানের নামে তরুণ-তরুণীর
সাক্ষাত, সম্মিলন, কথোপকথন, কনসার্ট, মদ্যপান
এমনকি অবৈধ সংস্পর্শ – কী হয় না দিনটিকে কেন্দ্র
করে । এ দিনটিতে অনেকে তাদের অবৈধ প্রেম
নিবেদন করে । অনেকে অবৈধ উপায়ে নিজের
সতীত্ব নষ্ট করার জন্য দিনটি নির্ধারণ করে ।
এছাড়া উন্নত ক্লাবগুলোতে আরো কী চলে, তা না-
ইবা বলা হলো ।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আর ব্যভিচারের
কাছেও যেয়ো না । নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং
মন্দ পথ ।” (আল-ইসরা: ৩২)
ব্যভিচারের কাছে যাওয়ার অর্থ কাজটির ভূমিকায়
যা কিছু হয় সবকিছু । কথা বলা, সাক্ষাৎ, সম্মিলন,
কনসার্ট, নাচানাচি, গান সবই চলে আসবে। আল্লাহ
এই সবগুলোই নিষেধ করেছেন । আর আল্লাহর নিষেধ
মানে হারাম । কবীরা গুনাহ ।
অবহেলা করে এগুলোতে অংশগ্রহণ করা ঈমান নষ্টের
কারণ হতে পারে । তাওহীদের পরিপন্থী তো বটেই ।
আল্লাহকে এক ইলাহ হিসেবে স্বীকার করে নেয়ার
অর্থ তাঁকেই একমাত্র বিধানদাতা হিসেবে স্বীকার
করে নেয়া । এবং তাঁর যে কোনো বিধান বিনা
প্রশ্নে মেনে নেয়া ।
কেউ যদি বিষয়টিকে অবহেলা করে তাহলে তা
কুফরী হবে । তেমনি কেউ এতে অংশ না নিলে যদি
তাকে ঠাট্টার কেন্দ্রবিন্দু বানানো হয়, তাহলেও তা
কুফরী হবে । কেউ এসবে অংশ নিলে, তাকে সমর্থন
করাটাও কুফরী হবে । একজন মুসলিম নিশ্চয় কুফরী
পছন্দ করতে পারে না ।
এমনিতে দিবসটির পেছনে যে ভালবাসার বাণী
রয়েছে, তাতে ইসলামের কোনো আপত্তি নেই । বরং
ইসলামের পুরো সিস্টেমটাই ভালবাসা ও দয়ার ওপর
প্রতিষ্ঠিত । সে ভালবাসা এক দিনের নয়, নয় এক
বছরের । সে ভালবাসা সারা জীবনের, ক্বিয়ামত
পর্যন্ত ।
আল্লাহ আমাদের এসব জায়গায় সুবিবেচনাপ্রসূত
সিদ্ধান্ত নেয়ার তাওফীক দিন । আমীন । (সংগৃহীত)
##শেয়ার করে সবার কাছে পৌঁছে দিন ইসলামের
শাশ্বত বাণী। হৃদয় থেকে হৃদয় উদ্ভাসিত হোক
ঈমানের আলোকচ্ছটায়।

Sunday 7 February 2016

ভালবাসা দিবসকে না বলুন,

Saturday 6 February 2016


ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস (Valentine Day)....
ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস (VALENTINE'S DAY )

Friday 5 February 2016

ঢাকা শহরের যে সকল স্থানে মহিলাদের ছালাত আদায়ের ব্যাবস্থা রয়েছে...
রূপ তুমি কার?
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের কাছে রূপ অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে মূল্যায়িত হয়ে আসছে-
সেটা মানুষের বেলায় যা, পশু-পাখি ভালোবাসার
ব্যাপারেও তা। তাইতো কালো বিড়াল দেখলে
মানুষ ভয় পায়, অশুভ ভাবে, কাককে পছন্দ করে এমন
মানুষও মিলবে কিনা সন্দেহ। তাহলে দেখুন মানুষের
বেলায় এই ব্যাপারটি কতখানি গুরুত্ববহ করে তুলেছে
মানুষের গড়া সমাজ ! কালো মেয়ে হলে ভালো
জায়গায় কাজ পেতে কষ্ট হয়, অনেক বান্ধবীর মধ্যে
একজন কম সুন্দরী থাকলে সে ভোগে inferiority
complex এ। আর বিয়ে-শাদির বেলাতে তো কথাই
নেই। সবাই সুন্দরী পরী যায়-না থাকুক তার বিদ্যা
কিংবা ভদ্রতা।
এতো বললাম কেবল মেয়েদের কথা যাদের জন্য যুগ
যুগ ধরে উৎপন্ন হচ্ছে ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, বয়স
বাড়লেও যেন বুড়ো স্বামীর কাছে কিশোরী থাকা
যায়-সে প্রয়াসে wrinkle অপসারণীয় ক্রিম ইত্যাদি।
তবে এখনকার দিনে ছেলেরাও এই নির্মম
নির্যাতনের হাত থেকে ছাড় পাচ্ছে না!! তাই তো
‘ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম’ এর মত পণ্যের প্রসার
ঘটছে !
পুরো বিশ্বের সমাজ ব্যবস্থাটা এখন এতটাই ঠুনকো!
পশ্চিমা সভ্যতায় গা ভাসিয়ে আমরা এতটাই
বস্তুবাদী হয়ে উঠছি যে অভিব্যক্ত ব্যাপারগুলো
ছাড়া আর কিছু আমাদের মগজে স্থান পায় না-
অবস্থার ভয়াবহতায় তাই আমরা আল্লাহ্কে না দেখে
বিশ্বাস করি না, ফেরেশতাদের না দেখে মানি না,
কুরআনের আয়াতেও নেই আস্থা- পরিণামে আমরা
হয়ে উঠছি ভোতা মানব জাতি- যারা তাদের
দুর্বলতাকে পুঁজি করে পাড়ি দিতে যাচ্ছি অজানা
গন্তব্য- সর্বশিক্তিমানের সাথে দেই পাল্লা!!
রূপের প্রসংগ থেকে ইসলামে চলে আসার পেছনে
একটি কারণ আছে। কিছুদিন আগে একটি শিক্ষামূলক
ভিডিও দেখলাম। ভিডিওটির মূল বক্তব্য ছিল
মানুষের রূপ আল্লাহ্র কাছে মূখ্য নয়- আল্লাহ্র কাছে
বান্দার ঈমান এবং আমলই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে বেশ কয়েকটি হাদীস share করা হয়েছে। তবে
সত্যিকার অর্থে আমি এই হাদিসগুলো থেকে
অনেকগুলো lesson পেয়েছি।
প্রথম হাদীসটি বায়হাকীর। হাদীসটি এরকম যে
রাসূলুল্লাহ্ (স) এর সময়ে যাহ্র (র) নামে একজন
সাহাবী ছিলেন যার মাঝে বাহ্যিক সৌন্দর্য বলতে
কিছুই ছিল না। এই ব্যাপারটি মানুষ অত্যন্ত
বিনম্রভাবে উল্লেখ করত এবং যাহ্র (র)ও নিজেকে
ছোট মনে করতেন। তাই আমাদের প্রিয় নবী (স)
সবসময় চেষ্টা করতেন যেকোন ভাল কাজে যাহ্র (র)
কে উৎসাহিত করার, তাকে সবসময় এই অনুভূতি
প্রদানের যে তিনি (স) যাহ্র (র) কে কত্ত care করেন।
একদিন নবী করীম (স) যাহ্র (র) কে দেখলেন
বাজারে তার পণ্যদ্রব্য বেচতে। তিনি (স)
সাহাবীকে পেছন থেকে জাপটে ধরে মজা করে
বলতে লাগলেন, “কে কিনবে আমার এই দাসটাকে?”
যাহ্র (র) নবীজী (স) এর কন্ঠস্বর শুনে এবং তাঁর
কোমল হাত দেখেই চিনলেন; বুঝলেন আল্লাহ্র রাসূল
(স) তার সাথে মশকরা করছেন। তিনি তাঁকে (স)
বাধা দিলেন না। তবে প্রত্যুত্তরে বললেন, “হে
আল্লাহ্র রাসূল (স), কে আমাকে কিনবে যদিও বা
আমি একজন দাস হতাম?” অর্থাৎ তিনি বোঝালেন
যে তিনি তার চেহারার কারণে মানুষের কাছে
এতটাই অগ্রহণীয় ছিলেন যে মানুষ তাকে দাস
হিসেবেও কিনতে চাইতো না। আমাদের প্রিয় নবী
(স) এতটাই অমায়িক ছিলেন যে তিনি তাঁর হাত-
দুখানা যাহ্র (র) এর কাঁধে রেখে বললেন যে
আল্লাহ্র কাছে যাহ্র (র) এর মূল্য সীমাহীন; তার
সৌন্দর্য আল্লাহ্র কাছে অনেক বেশি শুধুমাত্র তার
ঈমানের কারণে; আর একজন মুসলিমের কাছে
আল্লাহ্র পছন্দের বান্দা হওয়া অপেক্ষা অধিক
গুরুত্বপূর্ণ কী হতে পারে?
দ্বিতীয় হাদীসটিতে বর্ণনা করা হয়েছে জুলাইবিব
নামের একজন সাহাবীকে নিয়ে। তিনি তার
appearance এর জন্য এতটাই কুপরিচিত ছিলেন যে তার
বাবা-মা সম্পর্কে কেউ জানতনা, কেউ তাকে
নিজেদের গোত্রের লোক বলে মানত না, ব্যাপারটা
এতটাই কঠিন ছিল তার জন্য যে মানুষ তাকে যে নাম
দিয়েছিল (জুলাইবিব) তার অর্থ হল ‘বেটে/ত্রুটিপূর্ণ’।
তাকে সবসময় লোকেরা উৎপীড়ন করত। নাম-গোত্রহীন
এই লোকটির অবস্থা এতটাই অসহায় ছিল যে তিনি
লোকদের সাথে কথা বলতে পারতেন না কেননা
তারা সবসময় তাকে খোঁচাতো; তাই তিনি কথা
বললে মহিলাদের সাথেই বলতে পারতেন কেননা
মহিলারা কিছুটা হলেও তার প্রতি সহমর্মিতা
দেখাতো। আমাদের প্রিয় রাসূল (স) সবসময় চেষ্টা
করতেন জুলাইবিবকে অনুপ্রাণিত করার, এই ধারণা
দেয়ার যে সৌন্দর্যই মূখ্য ব্যাপার নয়। তিনি
প্রতিনিয়ত জুলাইবিবকে তাঁর (স) কাছের একজন
সাহাবী ভাবানোর চেষ্টা করতেন। যেহেতু
জুলাইবিবের appearance এর জন্য কেউ তাকে
ভালোবাসতনা, তাই নবী করীম (স) নিজেই একজন
ধন্যাঢ্য আনসারের কাছে গেলেন তার মেয়ের জন্য
প্রস্তাব দিতে। প্রথমদিকে আনসার ভেবেছিল যে
প্রস্তাবটি নবীজীর নিজের জন্য; কিন্তু যখন
জানলেন এটি জুলাইবিবের জন্য, তিনি নারাজ
হলেন। তবুও তিনি তা প্রকাশ করলেন না। নবীজীর (স)
সম্মান রক্ষার্থে তিনি বললেন তিনি এই ব্যাপারটি
তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে জানাবেন। যেহেতু
আনসারটি সমাজের উচ্চ-শ্রেণির ছিলেন, তার মেয়ে
ছিল পরম-সুন্দরী, তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা আশা
করেছিল নবীজী (স) কিংবা প্রথম সারির
সাহাবীদের কেউ হয়ত তার মেয়েকে বিয়ে করবে।
তাই এই প্রস্তাব শোনার পর আনসারের স্ত্রী তাড়
স্বরে চেঁচাতে লাগল। মা-এর চেঁচামেচি শুনে মেয়ে
ছুটে এল। প্রস্তাব শোনার পর মেয়েটি তার বাবা-
মাকে জানালো সে এই প্রস্তাবে রাজি কেননা এই
প্রস্তাব এসেছে আল্লাহ্র রাসূলের (স) এর তরফ
থেকে, তাঁকে ফিরিয়ে দেয়ার সুঃসাহস সে করতে
চায় না- নিশ্চয়ই এর মধ্যেই তার জন্য সকল কল্যাণ
নিহিত। অতঃপর জুলাইবিবের বিয়ে হল পরম সুন্দরী
আনসারের মেয়ের সাথে এবং খলিফা উসমান (র)
বিয়ের সকল ব্যয়ভার নিজে বহন করলেন কেননা
জুলাইবিব যে এতটাই গরীব ছিলেন।
রাসূলুল্লাহ্ (স) জুলাইবিবকে এতটাই ভালোবাসতেন
যে উ’হুদের যুদ্ধের পর তিনি যখন জুলাইবিবকে খুঁজে
পাচ্ছিলেননা, তখন তিনি সবাইকে বলছিলেন যে
তিনি (স) জুলাইবিবকে খুব miss করছেন। যখন ময়দানে
তিনি জুলাইবিবের লাশ দেখতে পেলেন, দেখলেন
লাশের পাশে ৭জন শত্রু সৈন্যের লাশও পড়ে আছে-
অর্থাৎ জুলাইবিব শহীদ হবার আগে ৭জন শত্রুকে
হত্যা করেছিল। জুলাইবিব গড়নে ছোট-খাটো ছিল
বলে রাসূলুল্লাহ (স) নিজ হাতে জুলাইবিবকে তুলে
নিলেন। নিজ হাতে তার কবর খুড়লেন এবং তাকে
দাফন করলেন। জুলাইবিবের জন্য এর থেকে বড়
পাওয়া আর কী হতে পারে যে আল্লাহ্র রাসূল (স)
নিজ হাতে তাকে দাফন করেছেন, তার জন্য দুয়া
করেছেন?
এই হাদীস দুটো থেকে কেবল রূপ-সংক্রান্ত শিক্ষাই
আমরা পাই না; এই হাদীস দুটোতে আছে আরো কিছু
অমূল্য শিক্ষা।
যারা আমাদের প্রিয় নবীকে (স) নিয়ে অপবাদ
ছড়ায়, যারা তাঁকে নিয়ে মিথ্যাচার রটায়, যারা
তাঁর জীবন থেকে শিক্ষামূলক কিছু পায় না
নোংরা অপবাদ ছাড়া, তারা দেখুক আমাদের নবী
(স) এসব ঠুনকো অপচেষ্টা থেকেও কত বৃহৎ! কী
মহান তাঁর শিক্ষা। আল্লাহ্র মনোনিত নবী হয়েও
কী নিরহংকারী ছিলেন- তাঁর (স) সাহাবীদের
প্রকাশিত-অপ্রকাশিত দুঃখের সময় তিনি কত
চেষ্টা করে গেছেন তাদের উৎসাহিত করার।
যাহ্র (র) রাসূল (স) কে খুব ভালোবাসতেন ।
রাসূলের নূরানী হাতের সংস্পর্শ থেকে বঞ্ছিত
হতে চায়নি বলেই রাসূলুল্লাহ (স) এর জাপটে ধরার
পর খেলাচ্ছলেও fight back করেননি।
আমাদের এই সময় মুসলমান নাম নিয়ে যেখানে
আমরা রাসূলকে (স) সম্মান দেখাতে পারি না,
সেখানে জুলাইবিবের স্ত্রী কিভাবে রাসূলের (স)
সম্মান দেখাতে, তাঁর অনুরোধকে আদেশ মেনে
এবং তাতেই তার কল্যাণ নিশ্চিত ধরে বিয়ে করে
বসল এমন মানুষকে যে কিনা সমাজে ঘৃণিত,
নিন্দিত! আমাদের মধ্যে এত বড় ত্যাগ করার মত
আমরা কেউ আছি কিনা তাতে আমার সন্দেহ নেই,
তবে রাসূলের নির্দেশ মেনে একজন দ্বীনি
ব্যক্তিকে বিয়ে করা এবং বিয়েতে অপচয় না
করার যে শিক্ষা- তাই বা আমরা কতটুকু মানতে
পারছি ??
রাসূলুল্লাহ্ (স)খুব ভালোভাবেই জানতেন সমাজে
জুলাইবিবের অবস্থান সম্পর্কে। তাও তিনি কোন
সাধারণ নারীর জন্য জুলাইবিবের প্রস্তাব দিলেন
না, এমন পরিবারের কাছেই প্রস্তাব দিলেন যেন
জুলাইবিব আর নিজেকে ছোট মনে না করে।
ইসলাম বিয়েতে মেয়েদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়-
কেবল গুরুত্ব দেয় বলবনা, বরং মেয়েদের মতামত না
থাকলে বিয়েটাই যে হয় না। তাই যারা ‘ইসলামে
নারীর অধিকার নেই’ নামের একই ভাঙ্গা রেকর্ড
দিনের পর দিন বাজিয়ে যায়, তাদের জন্যই তো
আমাদের নবী (স) হাজার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে
গিয়েছেন। আমাদের এই উপলব্ধি আসার জন্য
প্রয়োজন যথেষ্ট জ্ঞান এবং উদার
মনমানসিকতার- ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে ইসলামের
বিরুদ্ধে সকল প্রকার একচোখা চিন্তাচেতনা।
হয়তো এই হাদীস দুটির মধ্যে আরো অনেক শিক্ষা
লুকিয়ে আছে যা আমি আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিমত্তা
থেকে বের করতে পারিনি। তবে মূল যে শিক্ষা এই
হাদীস থেকে পাওয়া যায় তা কিন্তু আমাদের
সমাজের ক্ষুদ্র চিন্তাচেতনাকে ১৪০০ বছর আগেই
ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এতদিন পর যখন
ফ্যাশনের দাসত্ব করছি, সেখানে ১৪০০ বছর আগেই
মহান আল্লাহ্পাক মুসলিমদের কেবলমাত্র তাঁর
দাসত্ব করার গৌরবে গৌরবান্বিত করেছেন।
Please, আমরা একটু ভাবি- একটু ভাবি আমাদের
নিজেদের নিয়ে। অনেক তো হল রঙ ফর্সা করার
চেষ্টা, অনেক তো দেখলাম Miss Universe হওয়ার
স্বপ্ন, অনেক তো বেচে খাওয়া হল নিজেদের
সৌন্দর্য। এখন নাহয় একটু ভাবি যা আমাদের রাসূল
(স) আমাদের বলে গিয়েছেন- ঘৃণা করি যারা রূপ
বাদে আর কোনকিছুকেই মূল্য দিতে পারে না, ঘৃণা
করি সেইসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে যারা
আমাদের পণ্য বানিয়ে রাখছে, বয়কট করি যেসব
মনমানসিকতাকে যা আমাদের আত্মিক উৎকর্ষতাকে
জঘণ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আল্লাহ্ ছাড়া তো
কেউ আমাদের সঠিকভাবে মূল্যায়নের মাপকাঠি
শেখাতে পারল না। তাহলে কেন আল্লাহ্কে খুশি
করার জন্য আমি উৎসাহী নই? কেন এই মেকী সৌন্দর্য
চর্চা, কেন অন্যকে ছোট করার প্রতিযোগিতা ???
আল্লাহ্ যেন আমার এই লেখা অন্ততপক্ষে একজন
মানুষের চিন্তা-চেতনাকে হলেও বদলাতে সাহায্য
করে, সেই দুয়া করছি। আমীন।

Tuesday 2 February 2016

ইসলামিক "গল্প থেকে শিক্ষা"
* ন্যায়বিচার *

Sunday 31 January 2016

*গল্প থেকে শিক্ষা*
একজন লোক মাত্র বিয়ে করে তার
স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরছি
তারা যখন নৌকা দিয়ে সাগর পাড়
হচ্ছিল, তখন হঠাৎ একটি বড় ঝড়ের
কবলে পড়েছিল।
লোকটি ছিল একজন সাহসী যোদ্ধা,
কিন্তু তার স্ত্রী খুব ভীত হয়ে ওঠে যেহেতু 
নৌকাটি ছিল ছোট এবং যে কোন মুহূর্তে 
তারা নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে এতে সে খুব 
নিরাশ হয়ে পড়ল।

কিন্তু"
লোকটি তখনও নীরব এবং শান্ত ছিল যেন কিছুই ঘটেনি। মহিলার আতঙ্কগ্রস্ত এবং কম্পিত
কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, “আপনি কি ভীত
নন ?”। এটাই আমাদের জীবনের শেষ
মুহূর্ত হতে পারে! শুধুমাত্র কিছু
অলৌকিক ঘটনা আমাদের
রক্ষা করতে পারে; অন্যথায় মৃত্যু নিশ্চিত।
লোকটি হাসতে হাসতে তার
তলোয়ারটি খোলস থেকে বের করল।
মহিলাটি আরো আতঙ্কিত হয়ে পরল;
সে আসলে কি করতে যাচ্ছে?
তারপর সে তার
খোলা তলোয়ারটি তার স্ত্রীর প্রায়
গলাকে স্পর্শ করে ধরে রাখল...
সে বলল, “তুমি কি ভয় পাচ্ছ?”
তার স্ত্রী হাসতে শুরু করল আর বলল,
“আমি কেন ভয় পাব?
তলোয়ারটিতো আপনার হাতে, কেন
আমি ভয় পাব?
আমি জানি যে আপনি আমাকে আনেক
ভালবাসেন।”
“সে তলোয়ারটি খোলসের ভিতর
রাখতে রাখতে বলল, “তুমি আমার
উত্তর পেয়েগেছ” আমি জানি আল্লাহ
আমাদের ভালবাসেন, এবং ঝড় তাঁরই হাতে।
তাই যাহা-কিছুই হতে যাচ্ছে ভালই
হবে। যদি আমরা বেঁচে থাকি, ভালো;
আর না বাচলেও, ভালো; কারণ সবকিছু
তাঁর হাতে এবং তিনি কোন ভুল কিছু
করতে পারেন না।
★সৃষ্টিকর্তার
প্রতি বিশ্বাস বৃদ্ধি করো এবং তাঁর
প্রতি বিশ্বাস রেখো যিনি তোমার
জীবনকে পুরো বদলে দিতে সক্ষম।
সবকিছুই কোন একটি কারণেই ঘটে।

সংগ্রহীত

Thursday 28 January 2016

মুসলমানেরা এতভাগে বিভক্ত কেন .?

প্রশ্নঃ মুসলমানের যেখানে এক এবং একই কুরআনের অনুসারী তাহলে মুসলমানদের মধ্যে এত বিভক্তি এবং চিন্তাদারার এত বিভিন্নতা কেন?
*
নিন্মে এই প্রশ্নের জবাবে কোরআন হাদীসের রেফারেন্স তুলে ধরা হল.......;

ক) মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিৎ

*
এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, আজকের মুলমান নিজেদের মধ্যেই অসংখ্য ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। আর তার চাইতেও দুঃখজনক হলো এই বিভক্তি খোদ ইসলামের দ্বারা আদৌ স্বীকৃত নয়। ইসলাম বিশ্বাস করে তার অনুসারীদের মধ্যে ঐক্য এবং একতার লালন করতে। জ্যোতির্ময়ী কুরআন বলছেঃএবং আকড়ে ধরো দৃঢ়তার সাথে সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে (যা তিনি ঝুলিয়ে রেখেছেন তোমাদের জন্য কুরআনের আকারে) এবং নিজেরা বিভক্ত হয়ে যেও না।

এ আয়াতে যে রজ্জুর কাথা বলা হয়েছে সে রজ্জু কি বা কোন রজ্জু? জ্যোতীর্ময় কুরআন, মহাবিজ্ঞান আল কুরআনই সেই আল্লাহর রজ্জু যা সকল মুসলমানের সম্মিলিতভাবে ধরে রাখা উচিত। ঐক্যের ব্যাপারে দ্বিগুন গুরুত্ব দেয় হয়েছে। অর্থাৎ সবাই মিলে শক্ত করে ধরো বলার সাথে সাথেই বলা হয়েছে বিভক্ত হয়ো না।

কুরআন আরো বলছেঃ
আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসূলের। (৪:৫৯)

সকল মুসলমানের কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদূসসমূহ অনুসরণ করা কর্তব্য এবং নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হওয়া উচিত নয়।

খ. ফের্কাবাজী ও বিভক্তি ইসলামে নিষিদ্ধ

*
জ্যোতির্ময় কুরআন বলছেঃ
যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে দিয়েছে এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে তাদের সাথে তোমার এতটুকু সম্পর্ক নেই। তাদের এসব ব্যাপার আল্লাহ কাছে ন্যাস্ত। অবশেষে তাদেরকে তিনি বলে দেবেন সেই সব সম্পর্কে যেসব কাজ তারা করছিল। (সূরা আনআমঃ১৫৯)

এ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, তাদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে যারা তাদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে।

কিন্তু কেউ যখন কোনো মুসলমানকে জিজ্ঞেস করে তুমি কে? সাধারণ উত্তর হলো, আমি একজন সুন্নি অধবা আমি শিয়া। অনেকেই নিজেদেরকে হানাফী অথবা শা’ফী অথবা মালেকী অথবা হাম্বলী ইত্যাদি হিসেবে পরিচিত হতে গর্ববোধ করেন। কেউ আবার দেওবন্দী। কেউ ব্রেলোভী।

গ. আমাদের রাসূল ছিলেন একজন ‘মুসলিম’

*
এ ধরনের একজন মুসলমানকে কেউ যদি প্রশ্ন করে আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) কি ছিলেন? তিনি কি একজন হানাফী কথবা শাফী অথাবা হাম্বলী ছিলেন? না! তিনি ছিলেন একজন মুসলিম। তাঁর পূর্বে আগত আল্লাহর সকল নবী ও রাসূলগণের মতো।

যেমন সূরা নিসা ৫২ নং আয়াতে বলা হয়েছে-ঈসা (আ) ছিলেন একজন মুসলিম। ৬৭ আয়াতে বলা হয়েছে- ইব্রাহীম না ইহুদী ছিল না খ্রীষ্টান, সে ছিল একজন মুসলমান

ঘ. কুরআন বলছে নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দাও

*
কেউ পরিচয় জানতে চাইলে তার বলা উচিত আমি একজন মুসলিম-না হানাফী না শাফী।

আর কে হতে পারে বক্তব্যে তার চাইতে উত্তম? যে (মানুষকে) আল্লাহর পথে আহ্‌বান করে আর যাবতীয় জীবন কর্ম যেভাবে আল্লাহ করতে বলেছেন সেভাবে করে এবং বলে আমি তো আল্লাহতে সমর্পিতদের একজন। (মুসলিম) (৪১:৩৩)

কুরআন বলে আমি তাদেরই একজন যারা আল্লাহতে সমর্পিত। অন্য কথায় বলো, আমি একজন মুসলিম।

২. রাসূলুল্লাহ (স) অমুসলিম রাজা বাদশাহদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। সেই সব চিঠিতে তিনি সুরা আলে ইমরানের এই আয়াত উল্লেখ করেছিলেন।

তাহলে বলে দিন ওদেরকে তোমরা সাক্ষী থাকো একথার যে আমরা (কিন্তু) সর্বান্তকরনে আল্লাহতে আত্মসর্ম্পনকারী‘মুসলিম’। (৩:৬৪)

ঙ.. ইসলামের মহান ইমামগণের প্রতি শ্রদ্দা ও সম্মান

ইসললামের ইতিহাসে মহান ইমাম ও আলেমগনের প্রতি আমাদের সম্মানবোধ আন্তরিক হতে হবে। তাঁদের জীবন নিংড়ানো জ্ঞান সাধনা মুসলিম জাতিকে জ্ঞান সম্পদে সম্পদশালী করেছে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর দরবারে তাঁরা পুরুষকৃত হবেন। সাধারণের মধ্যে কিউ যদি বিশেষ কোনো ইমামের রীতি পদ্ধতি অনুসরণ করেন, সেটা অবশ্যই দোষের কিছু নয়। কিন্তু পরিচয়ের ক্ষেত্রে তাদের কারো নাম জড়িয়ে পরিচয় দেয়া এক ধরনের সংকীর্ণতার প্রকাশ। যেমনটা করতে তাঁরা কেউ বলে জাননি। নবী রাসূলগনের মতো তাঁরাও ছিলেন শুধুমাত্র আল্লাহতে সমর্পিত মুসলিম। কাজেই তাঁদের কারো অনুসারী হলেই পরিচয় বদলে যায় না। মুসলমানদের পরিচয় একটাই তারা মুসলিম।

অনেকেই হয়তো তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংকীর্ণ মানসিকতাকে চাপা দেবার জন্য সুনানে আবু দাউদে বর্নিত ৪৫৭৯ নং হাদীস খানি নিয়ে তর্কে লাফিয়ে পড়বেন। যা রাসূল (স) বলেছেন, আমার উম্মত ৭৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে।

কিন্তু এ হাদীসখানি রাসূল (স) তাঁর উম্মতের অধঃপতনের চূড়ান্ত পর্যায়ে যেসব বিকৃতি দেখা দেবে তারই অন্যতম একটি আগাম বার্তা বহন করছে। তিনি তো একথা বলেননি। যে মুসলমানরা এভাবে ফের্কায় ফের্কায় ভাগ হয়ে যেতে হবে।

কুরআন যেখানে আমাদেরকে আদেশ করছে কোনো বিভক্তির সৃষ্টি করা যাবে না। অতএব যারা কুরআন ও শুদ্ধ হাদিস সমূহের একনিষ্ঠ অনুসারী এবং কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতার না কারণ হয় না কাউকে উৎসাহিত করে তারাই সঠিক পথে রয়েছেন।

তিরমিযির ১৭১ নং হাদীসে বলা হয়েছে রাসূল (স) বলেছেনঃ আমার উম্মত ৭৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এর মধ্যে শুধু একটি ছাড়া বাদ বাকি সব জাহান্নামী হবে। সাহবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ সেই শুদ্ধ দল কোনটি হবে?রাসূল (স) বললেন, “যাদের কাছে আমি এবং আমার সঙ্গী সাথীরা অনুসরণীয় হবো। .

আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসূলের” কুরআনের বহু জায়গায় এই একটি কথা মুসলমানদের মনের মধ্যে স্থায়ী ভাবে বসিয়ে দেবার জন্য নানান ভাবে বলে দেয়া হয়েছে। কাজেই একজন মুসলমানের অনুস্মরনীয় আদর্শ হচ্ছে কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীস। তারপর এ দুয়ের নির্দেশনা সমূহকে অনুশীলনীর পদ্ধতি হিসেবে সে যদি কোনো বিশেষ আলেমকে অনুসরণ করতে চায় তাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তা যদি আবার কোনো এক পর্যায়ে গিয়ে খোদ কুরআন ও হাদীসের বিরুদ্ধে চলে যায় তাহলে তা যত বড় বিশেষজ্ঞ আলেমই হোকনা কেন্ দুই কড়ি মূল্য রাখেন না।

প্রতিটি মুসলমান যদি তার সামর্থ অনুযায়ী কুরআন বুঝে পড়ার অনুশীলনী করে এবং সেখান থেকে পাওয়া মূলনীতিসমূহ খোদ রাসূল (স) এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী বাস্তবায়নের চেষ্টা করে তাহলে ইনশাআল্লাহ একদিন এই বিভক্তি দূর হয়ে যাবে এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী এক ‘উম্মাহ’ হয়ে আত্মপ্রকাশকরতে সমক্ষ হবো।

Sunday 24 January 2016

জীবনকে সুন্দর করার জন্য কিছু পদক্ষেপ ।
— সবার আগে সেই খারাপ কাজ
ছেড়ে সরে আসতে হবে।
— আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত
হতে হবে [তাওবা​ ও ইস্তিগফার​
করা]
— ক্রমাগত ভালো কাজ
করতে হবে, কেননা ভালো কাজ
মন্দ কাজকে ঢেকে দেয়।​​
— সঙ্গীসাথী বদলে ফেলতে হবে।​
আগেকার সম্পূর্ণ ফ্রেন্ড
সার্কেলকে এভয়েড করতে হবে।​
— একাকীত্ব
থেকে দূরে থাকতে হবে,
প্রয়োজনে ভালো সঙ্গীর
কারণে গিয়ে ভালো বিষয়ে আলোচনা করতে দূরে
কোথাও
যাওয়াও উচিত হবে।
— কমিউনিকেশন ডিভাইস
থেকে দুরত্ব রাখতে হবে, বিশেষ
করে একাকীত্বের সময়ে যেন
আবার কোন নতুন সমস্যায়
জড়িয়ে পড়ার স​​
ম্ভাবনা না থাকে।
— আল্লাহর স্মরণ করতে হবে সবসময়।​
— নামাজে নিয়মিত হতে হবে,
ইসলামি জ্ঞানার্জনে নিজেকে লাগিয়ে দিতে
হবে।
— নিজেকে স্মরণ করাতে হবে,
দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী।
আখিরাতে আল্লাহ এই জীবনের
সবকিছুর হিসেব নিবেন।
— বিবাহপূর্ব বা বিবাহবহির্ভূত সকল
সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন।
— মোবাইল ফোন, ফেসবুক,
মেসেঞ্জারেও যেকোন
কমিউনিকেশন থেকে দূরে থাকুন।
নইলে শয়তানের ওয়াসওয়াসায়
জীবন আবার জটিল হয়ে যাবে।
আল্লাহ আমাদের বলেছেনঃ
“…নির্লজ্জতার কাছেও
যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক
কিংবা অপ্রকাশ্য…” — [সূরা আনআম
– ১৫১]
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের
মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক,
তাদের জন্যে ইহাকাল ও
পরকালে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি রয়েছে…” —[আন নূর :১৯]
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন
তাদের দৃষ্টি নত
রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর
হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য
খুব পবিত্রতা আছে… ” — [সূরা আন
নূর :৩০]
“আমি মানুষ
সৃষ্টি করেছি এবং তার মন
নিভৃতে যে কুচিন্তা করে,
সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি।…” —
[সূরা ক্বাফ -১৬]
তওবা কি?
একজন মহিলা আসলেন
মহানবী (সা) এর কাছে …
আর বললেন -“ হুজুর
আমাকে পাক করে দিন।”
মহানবী (সা) তাকে জিজ্ঞেস
করলেন -“ তুমি কি করেছ?
“ মহিলা বললেন -“ হুজুর
আমি ব্যভিচার (জিনা/
অবৈধ সম্পর্ক) করেছি।
“ মহানবী (সা) বললেন -
“ তুমি কি বলছ ?
তোমার হুশ ঠিক আছে তো ?
“ মহিলা বললেন -“ হুজুর
আমি সত্যি বলছি।
আমি জিনা করেছি।
এবং গর্ভবতী হয়ে গিয়েছি।
.
“ মহানবী (সা) বললেন -
“ তুমি কি এরপূর্বে একজন
সাহাবীর জিনার শাস্তি
মৃত্যুদন্ড দেখনি ?
“ মহিলা বললেন -“ জ্বী হুজুর
আমি জানি।
আপনি আমাকে পাক করে দিন।”
.
মহানবী (সা) বললেন -“ ঠিক
আছে, এখন তুমি গর্ভবতী।
আগে তোমার সন্তান প্রসব কর।
তারপর তোমার বিচার হবে।
“ মহিলা চলে গেলেন। তাঁর
পিছনে কোনো প্রহরী কিংবা
পাহারা দেয়া হলনা।
সন্তান প্রসব করার পর
মহিলা ঠিক আবার মহানবী (সা)
এর কাছে আসলেন।
মহিলা বললেন -“ হুজুর
আমি সন্তান প্রসব করেছি।
এবার আমাকে পাক
করে দিন।” মহানবী (সা)
বললেন -“ তোমার
সন্তান এখনো ছোট।
.
সে যতদিন স্তন পান
করবে ততদিন
তুমি মুক্ত।” মহিলা চলে গেলেন।
নেই কোনো প্রহরী , নেই কোন
পাহারা।
নেই কারো চাপ।
মহিলা ঠিকই শিশু স্তন
পান করা শেষ করার পর আসলেন।
মহিলা-“ হুজুর আমাকে পাক
করে দিন।” তখন মহানবী (সা)
তার শাস্তি ঘোষনা করলেন।
মহিলাকে শাস্তি স্বরুপ
শরীরে কাপড়
পেচিয়ে মাটিতে পুঁতে দেয়া হল।
সকলের পাথর নিক্ষেপে মহিলার
মৃত্যু হল। মহানবী(সা) মহিলার
জন্য আল্লাহর
দরবারে দোয়া করলেন।
উমর (রা ) বললেনঃ ” ইয়া রাসুলুল্লাহ
আপনি একজন ব্যভিচারীর জন্য
দোয়া করছেন ?” মহানবী (সা)
বললেনঃ ” সে যে তওবা করেছে
তা ৭০ জন মক্কাবাসীকে যদি
ভাগ করে দেওয়া হয় ,
ঐ ৭০ জনের জান্নাত পাওয়ার
জন্যে এ তওবা যথেষ্ট।
“ তওবা করুন বিশুদ্ধ তওবা।
(সিহীহ মুসলিম শরীফ ) হাদীসটি উল্ল্যেখ
আছে-‘ সহীহ’
মুসলীম, ৬ষ্ঠখন্ড , অধ্যায়- ৩০

Saturday 23 January 2016


কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়
কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়
১. কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয়
চাওয়া ও দুয়া করাঃ
কবররে আযাব থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে
নিয়মিত দুয়া করতে হবে, বিশেষ করা দুয়া মাসুরাতে
বেশি বেশি দুয়া করতে হব। যেই দুয়া মাসুরা পড়তে
হবেঃ
দুয়া মাসুরা অর্থ হচ্ছে হাদীসে বর্ণিত দুয়া যেইগুলো
রাসুল সাঃ করতেন। আমাদের দেশের মানুষ মনে
করে, দুয়া মাসুরা শুধু একটাই (আল্লাহুম্মা ইন্নি
জালামতু নাফসান যুলমান কাসিরাও...), এটা ভুল।
নামাযে সালাম ফিরানোর আগে পড়তে হয় এমন
অনেক সুন্দর সুন্দর দুয়া আছে সহীহ হাদীসে। কারণ,
ফরয নামাযে আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ পড়ার পরে,
সালাম ফেরানোর আগে দুয়া বেশি কবুল করা হয়।
দুয়া মাসুরা এক বা একের অধিক, যত ইচ্ছা পড়া যায়।
এইগুলো মুখস্থ করে আমল করা উচিত।
৪টি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
দুয়া মাসুরা আছে। কবরের আজাব, জাহান্নামের
আজাব, দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর সময়ের ফেতনা ও
দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য
দুয়া মাসুরাঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইগুলো থেকে বাঁচার জন্য ফরয,
নফল বা সুন্নত, যেকোনো সালাতে তাশাহুদ ও দুরুদের
পরে সালাম ফিরানোর আগে এই দুয়া পড়তে
বলেছেন।
ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ، ﻭَﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ، ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ
ﻭَﺍﻟْﻤَﻤَﺎﺕِ، ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴْﺢِ ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ .
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিন
আ’যাবিল ক্বাবরি ওয়া মিন আ’যাবি জাহান্নাম,
ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহ’ইয়া, ওয়াল্ মামাতি,
ওয়ামিং সাররি ফিতনাতিল্ মাসীহি’দ্-দাজ্জাল।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আযাব
থেকে রক্ষা করো,আমাকে জাহান্নামের আযাব,
এবং দুনিয়ার ফিৎনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং
দাজ্জালের ফিৎনা থেকে রক্ষা করো।
বুখারী ২১০২, মুসলিম ১/৪১২, হিসনুল মুসলিম, পৃষ্ঠা –
৯০।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দুয়া মাসুরা হিসেবে এই দুয়া
পড়তে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।
২. কবীরা গুনাহ, যেইগুলো বড়বড় পাপকাজ, সেইগুলো
যে কারনে ক্বুরান ও সহীহ হাদীসে কঠিন শাস্তির
ভয় দেখানো হয়েছে, সেইগুলো বর্জন করা ও
আল্লাহর বেঁধে দেওয়া ফরয ও ওয়াজিব হুকুম পালনে
যত্নবান হওয়া।
৩. সুরা মুলক
প্রতিদিন সুরা মুলক তেলাওয়াত করলে আশা করা
যায় আল্লাহর রহমতে কবরের আজাব ও কেয়ামতের
দিন শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ “যে
ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা তাবারাকাল্লাযী
বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক) তেলাওয়াত করবে
আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর যামানায় এই সুরাটিকে আমরা
“আল-মা’আনিয়াহ” বা সুরক্ষাকারী বলতাম। যে
রাতের বেলা এই সুরাটি পড়বে সে খুব ভালো একটা
কাজ করলো”।
সুনানে আন-নাসায়ী ৬/১৭৯, শায়খ আলবানীর মতে
হাদীসটি হাসান সহীহ, সহীহ আত-তারগীব ওয়াল
তারহীব ১৪৭৫।
এই সুরা প্রত্যেকদিন রাতের বেলা তেলাওয়াত
করলে কিয়ামতের দিন শাফায়াত করে জান্নাতে
নিয়ে যাবে ইন শা’ আল্লাহঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেনঃ “কুরআনে এমন একটা
সুরা আছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা
একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে
ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো
তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)”।
সুনানে আত-তিরমিযী ২৮৯১, সুনানে আবু দাউদ ১৪০০,
মুসনাদের আহমাদ, ইবনে মাজাহ ৩৭৮৬।
ইমাম তিরমিযী বলেছেন হাদীসটি হাসান, ইবনে
তাইমিয়্যা বলেছেন সহীহ মাজমু ২২/২২৭, শায়খ
আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহ তিরমিযী ৩/৬,
সহীহ ইবনে মাজাহ ৩০৫৩।
বিঃদ্রঃ এইখানে তেলাওয়াত মানে শুধু তোতা
পাখির মতো রিডিং পড়ে যাওয়া না। এই প্রসংগে
সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ডের আলেমদের
ফতোয়া হচ্ছেঃ “এই হাদীসগুলোর আলোকে বলা
যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সুরা মুলক
বিশ্বাস করবে ও তেলাওয়াত করবে, এই সুরাতে যে
শিক্ষা দেওয়া আছে তা গ্রহণ করবে এবং যে হুকুম
আহকাম দেওয়া আছে সেইগুলো মেনে চলবে
কেয়ামতের দিন তার জন্য এই সুরাটি শাফায়াত
করবে”।

Friday 22 January 2016

তোমার শত্রুও যদি পরামর্শ চায় তবে
তাকে ভালো পরামর্শ দাও। কারণ, তোমার
পরামর্শে হয়ত সে তোমার বন্ধুতে পরিণত
হবে।

Thursday 21 January 2016

ইসলামের ঘটনা
ঘটনা :-৭
হযরত যায়েদ ইবনে দাসানা রা. কাফিরদের হাতে
বন্দী হবার পর পাপিষ্ঠরা তাকে শূলে চড়ানোর
আয়োজন করে। তামাশা দেখার জন্য সমবেত হয়
অনেক লোক। আবু সুফিয়ান তখনো ইসলাম গ্রহণ
করেননি। তিনি নরম সুরে জিজ্ঞাসা করলেন,
যায়েদ! সত্যি করে বলতো; আল্লাহর শপথ দিয়ে
তোমাকে জিজ্ঞেস করছি, তুমি কি এটা পছন্দ কর
যে, তোমার পরিবর্তে মুহাম্মদের গর্দান উড়িয়ে
দেয়া হোক আর তোমাকে হাসিমুখে তোমার
পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়া হোক। হযরত যায়েদ
রা. দৃঢ় কণ্ঠে জবাব
দিলেন, আল্লাহর শপথ! নবীজির যাত্রাপথে একটি
কাঁটা
লুকিয়ে রাখা হবে আর আমি ঘরে বসে আরাম করবো,
এতটুকুও আমার সহ্য হবে না।
হযরত যায়েদের জবাব শুনে সেদিন মক্কার কাফেররা
হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলো। আরব নেতা আবু সুফিয়ান
মন্তব্য
করেছিলেন, মুহাম্মদের প্রতি তার সাথীদের যে
ভালোবাসা আমি দেখেছি, অন্য কারো প্রতি এমন
ভালোবাসা আমি আর কখনো দেখিনি।
এই হলো সাহাবায়ে কিরামের রাসূল-প্রেমের
হৃদয়ছোঁয়া কয়েকটি দৃষ্টান্ত। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তারা পিতা-মাতা,
সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদের থেকেও অধিক
ভালোবাসতেন। একবার হযরত আলী রা. এর কাছে এক
ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি
আপনাদের কেমন ভালোবাসা ছিলো? হযরত আলী
রা. বললেন, আল্লাহর শপথ! হযরত রাসূলে কারিম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
আমরা আমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ধন-
সম্পদ ও তৃষ্ণার্ত সময়ে প্রাপ্ত পানির চেয়েও অধিক
ভালোবাসতাম। তাই হে পাঠক! প্রিয়নবীর প্রতি
উম্মত হিসেবে আমাদের হৃদয়েও জাগাতে হবে রসূল-
প্রেম। বাস্তবতার আলোকে
ফুটিয়ে তোলতে হবে প্রিয়নবীর সুন্নাতসমূহকে।
তবেই আমরা শামিল হতে পারবো তাদের কাতারে
যারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে
ভালোবেসেছিলেন সত্যিকারের ভালবাসা।
ঘুমানোর আগের দোয়া ।
Dua before sleeping
Allahumma bismika amutu wa ahya
‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া-আহইয়া’
O Allah.! by your name I die and live,
হে আল্লাহ! তোমার নামে আমি মরি ও বাঁচি’। অর্থাৎ
তোমার নামে আমি শয়ন করছি এবং তোমারই দয়ায় আমি পুনরায় জাগ্রত হব)।
ঘুম থেকে ওঠার সময় বলবেন,
 ﺍَﻟْﺤَﻤْﺪُ ِﻟﻠﻪِ ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﺃَﺣْﻴَﺎﻧَﺎ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﺃَﻣَﺎﺗَﻨَﺎ
ﻭَﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨُّﺸُﻮْﺭُ আলহামদুলিল্লা-হিল্লাযী আহইয়া-না
বা‘দা মা আমা-তানা ওয়া ইলাইহিন নুশূর’ (সমস্ত
প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে মৃত্যু দানের পর জীবিত করলেন এবং ক্বিয়ামতের দিন তাঁর দিকেই হবে আমাদের পুনরুত্থান)।
[ বুখারী হা/৬৩১৫, ৬৩২৪; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ,
মিশকাত হা/২৩৮২, ২৩৮৪, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯,
অনুচ্ছেদ-৬

Monday 18 January 2016

 ২০ লক্ষ নেকির দোয়া
ইসলামের ঘটনা
ঘটনা-৩

অহুদ যুদ্ধে মুসলিমগণ যখন বিপর্যয়ের সম্মুখীন, তখন এক আনসারী মহিলা যুদ্ধে জড়িত লোকজনের কাছে ব্যাকুল হৃদয়ে জানতে চাইলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেমন আছেন? এক ব্যক্তি বলল, তোমার পিতা শহীদ হয়ে গেছেন। মহিলা শুধু ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়ে অসহ্য অস্থিরতায় আবারো জানতে চাইলেন,
প্রিয় নবীজি কেমন আছেন? প্রিয় নবীর ভালোবাসার
কাছে যেন আপন পিতার শাহাদাতের সংবাদও ম্লান হয়ে যাচ্ছে! এরপর এক এক করে তাঁর স্বামী, ভ্রাতা ও পুত্রের শাহাদাতের সংবাদ জানানো হল তাঁকে। কিন্তু তিনি ইন্নালিল্লাহি…
উচ্চারণ করে বারবার মানুষের কাছে শুধু প্রিয়নবীর কথাই জিজ্ঞেস করছিলেন। এক সময় তিনি শুনতে পেলেন যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো আছেন। কিন্তু ব্যাকুল হৃদয় তাতেও শান্ত হলো না। এরপর নবীজিকে স্বচক্ষে দেখেই তবে শান্ত হলেন সেই আনসারী মহিলা। এটাই হলো প্রকৃত নবীপ্রেম।
প্রিয়নবীর প্রতি পবিত্র ভালোবাসা। যার উপমা মেলে না এ পৃথিবীতে।

Sunday 17 January 2016

ইসলামের ঘটনা
ঘটনা -২

সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ ইবনে আবদি
রাব্বিহি। তিনি তার বাগানে ফল-ফলাদি ও গাছ-
গাছালি দেখাশোনা করছেন। এমন সময় নবীজির
ইন্তিকালের সংবাদ জানতে পেলেন।
হৃদয়ের কোমল বৃত্তে তিনি আচমকা প্রচণ্ড আঘাত
পেলেন। দুঃখে শোকে আর মহব্বতের আতিশয্যে
আল্লাহর কাছ প্রার্থনা করে বসলেন, হে আল্লাহ!
আমার দৃষ্টিশক্তি রহিত করে দাও। প্রিয়নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে আমি এই
চোখ দিয়ে আর কিছুই দেখতে চাই না। অন্তরের
অন্তঃস্থল থেকে উৎসারিত এই প্রার্থনা বৃথা গেল
না। সত্যিই দৃষ্টিশক্তি রহিত করে দেয়া
হলো তার। মানুষের প্রতি কি মানুষের এমন
ভালোবাসাও হতে পারে, যে ভালোবাসার কাছে
নিজের দৃষ্টিশক্তির মহব্বতও হার মানে!
**রাতে ঘুমাতে যাবার দোয়া এবং ফজিলত**

আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ঘুম বা নিদ্রাকে
করেছি ক্লান্তি দূরকারী। (সুরা আন-নাবা;
আয়াত -৯) ঘুম মানুষের মস্তিষ্কজনিত সকল
প্রকার চিন্তা-ভাবনাকে দূর করে মস্তিষ্ক ও
অন্তরের সকল প্রকার স্বস্তি ও শান্তি দান
করে। দুনিয়ার জিন্দেগীতে যার বিকল্প
কোনো শান্তি হতে পারে না। এই ঘুম বা
নিদ্রা আল্লাহর পক্ষ হতে মানব জাতীর জন্য
সবচেয়ে বড় নিয়ামত।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন-
১. শোয়ার আগে বিছানাটা ঝেড়ে নেয়ার
জন্য।
২. শোয়ারর সময় ডান পার্শ্বের ওপর শোয়া
৩. অতপর এই দোয়া পড়া-
আল্লাহুম্মা আস্লামতু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া
ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু
আমরী ইলাইকা ওয়ালজা’তু যাহরী ইলাইকা
রাগ্বাতা ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা
মালজা’আ মিনকা ওয়া লা মানজা’আ মিনকা
ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকাতা-বিকা।
আল্লাজি আনঝালতা ওয়া বি
নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালাত।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমাতে
সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে মুখ ফিরালাম,
আমার কাজ তোমার প্রতি ন্যস্ত করলাম এবং
তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয়
গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোনো আশ্রয়স্থল ও
নাজাতের স্থান নেই। তোমার প্রেরিত
কুরআনের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার
প্রেরিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর প্রতি ঈমান আনলাম। (সহীহ বুখারী
ও মুসলিম)
ফজিলত :
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক
ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায়
ঘুমাতে যাবে তখন নামাজের ন্যয় অযু করবে।
তারপর তোমার ডান পার্শ্বের ওপরে শুবে এবং
উক্ত দোয়া পড়বে। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি তুমি সেই
রাতে মৃত্যু বরণ কর, তবে তুমি ইসলামের ওপর
মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে ওঠ, তবে
তুমি কল্যাণের সঙ্গে ওঠবে।
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, তখন বলতেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিসমিকা আ’মু-তু ওয়া
আ’হইয়া
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি
মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই অনুগ্রহে জীবিত
হব। (সহীহ বুখারী)
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
শোয়ার সময় ডান হাত গালের নীচে রেখে
নিম্নের দোয়াটি পড়তেন
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ক্বিনী আ’যা-বাকা
ইয়াওমা তাব’আছু ই’বা-দাকা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার
আযাব হতে রক্ষা কর, যেদিন তুমি তোমার
বান্দাদেরকে কবর হতে ওঠাবে। (জামে আত-
তিরমিজি)
৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর সময় সূরা
বাক্বারার শেষ দু’টি আয়াত তেলাওয়াত করবে,
তার জন্য তা যথেষ্ট হবে।’ (সহীহ বুখারী ও
মুসলিম)
এছাড়াও রাতে ঘুমাবার সময় কোনো বান্দা
আয়াতুল কুসরি পাঠ করে তবে আল্লাহর পক্ষ
থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হয় এবং
শয়তান তার নিকট আসতে পারে না এবং (তার
কোন মালের অনিষ্ট করতে পারে না)। (সহীহ
বুখারী)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
রাতে ঘুমানোর সময় সুরায়ে ইখলাছ, সূরা
ফালাক্ব, সূরা নাস পড়তেন। (সহীহ বুখারী ও
মুসলিম)
জামে আত-তিরমিজি শরীফে এসেছে, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত
ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে রাতে
শোয়ার সময় ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ, ৩৩ বার
আল হামদুলিল্লাহ, ৩৪ বার আল্লাহু আকবার
পড়তে বলেছিলেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামী আমাদেরকে কুরআন
সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন
আমীন। ছুম্মা আমীন
জাগো নিউজ ২৪.কম এর সঙ্গে থাকুন। সব সময়
ফজিলতপূর্ণ আমল ও দোয়া শিখুন। সে অনুযায়ী
আমলে জিন্দেগী গঠন করে আল্লাহর নৈকট্য
অর্জন করুন।

Saturday 16 January 2016

°°°স্বাধীনতা°°°

স্বাধীনতা তুমি অবৈধ সরকারের সাজানো ইলেকশন,
স্বাধীনতা তুমি মন্ত্রীর তালিকায় অযোগ্য সিলেকশন।
স্বাধীনতা তুমি মন্ত্রী সভায় বলা ফাকা বুলি,
স্বাধীনতা তুমি শাপলা চত্বরে চালানো নির্বিচারেগুলি।
স্বাধীনতা তুমি প্রতিবাদী বোনের বুকে বুটের লাথি,
স্বাধীনতা তুমি ছাত্রলীগের কু-কর্মের সাথী।
স্বাধীনতা তুমি বাংলা মায়ের বুকের দীর্ঘশ্বাস,
স্বাধীনতা তুমি ঝুলন্ত ফেলানির লাশ।
স্বাধীনতা তুমি ক্ষমতাসীনদের স্বপ্ন বিলাস,
স্বাধীনতা তুমি রানা প্লাজার বিভত্স লাশ।
স্বাধীনতা তুমি পদ্মা সেতুর আবুলের হাসি,
স্বাধীনতা তুমি সাজানো রায়ে সত্যের ফাসি।
স্বাধীনতা তুমি রক্তে রঞ্জিত পিলখানা,
স্বাধীনতা তুমি শাহবাগে মাতালের আস্তানা।
স্বাধীনতা তুমি শিয়ার বাজারে লুটতারাজ,
স্বাধীনতা তুমি মধ্য বিত্তের মাথায় বাঁজ।
স্বাধীনতা তুমি ছাত্রলীগের অবাধ গুলি বর্ষন,
স্বাধীনতা তুমি রাস্তা ঘাটে মা বোন ধর্ষন।
স্বাধীনতা তুমি দু চোখে দেখা আমার সর্বনাস,
স্বাধীনতা তুমি পরীক্ষার আগে প্রশ্ন পত্র ফাস।
স্বাধীনতা তুমি মুক্তি যুদ্ধের বিকৃতি ইতিহাস,
স্বাধীনতা তুমি সরিষার মধ্যে ভুতের বসবাস।
স্বাধীনতা তুমি ফসলের নায্য মুল্য না পাওয়া  কৃষক চাষী,
স্বাধীনতা তুমি আমার সোনার বাংলা আমি

তোমায় ভালবাসি

Friday 15 January 2016

***প্রবাসীর কান্না***
আও মাও কান্নার আওয়াজ শুনে ঘুম ভাংঙ্গলো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি হয়েছে? চোখ ডলতে ডলতে বাহির হয়.. তখন বুঝতে পারলাম পাশের রুমের নূরুল-হক ভাইয়ের কন্ঠ আস্তে আস্তে ওনার রুমে গেলাম‚ কি হয়েছে.? কি হয়েছে.? ওনার রুমমেট এক ভাই বলল উনার আব্বুর অবস্থা বেশী ভালো না। ওনি অনেক কান্নায় ভেঙে পড়লো. তার কথা আর ওনার কান্না শুনে আমার কিছু বুঝার বাকি রইলো না।
সান্ত্বনা দেওয়া ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো, নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না রুমে চলে এলাম,,
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো মা-বাবা. এমন  কোন খবর শুনলে কোন সন্তানই বা ঠিক থাকতে পারে? সত্যিই অনেক কষ্টের বেদনার জীবন হলো আমাদের এ  প্রবাস জীবন, আল্লাহ তুমি তার বাবা জীবনের সমস্ত কিছু ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করো এবং আমারএ ভাইকে ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দাও। (আমীন)
প্রবাস জীবন

Thursday 14 January 2016

একদিন ইব্রাহীম ইবনে আদহাম (রা:)বাসরা শহরের একটি বাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন!
 তাঁর পাশে সমবেত হয়ে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবু ইসহাক! আল্লাহ
সুবহানাহু তাআলা কুরআনে বলেন, 'আমাকে ডাকো, আমি
তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো' কিন্তু আমরা অনেক
প্রার্থনা করার পরেও আমাদের দোয়া কবুল
হচ্ছে না। তখন তিনি বললেন, 'ওহে বসরার অধিবাসী, দশটি
ব্যাপারে তোমাদের অন্তর মরে গেছে-
(১) তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে অবগত কিন্তু তাঁর প্রদত্ত
কর্তব্যসমূহ পালন কর না।
(২) তোমরা কুরআন পড় কিন্তু সে অনুযায়ী আমল কর না।
(৩) তোমরা দাবী কর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে ভালোবাসো
কিন্তু তাঁর সুন্নাহকে পরিত্যাগ কর।
(৪) তোমরা নিজেদেরকে শয়তানের শত্রু হিসেবে
দাবী কর কিন্তু তোমরা তার পদাংক অনুসরণ কর।
(৫) তোমরা জান্নাতে যেতে উদগ্রীব কিন্তু তার জন্য
পরিশ্রম কর না।
(৬) তোমরা জাহান্নামের ভয়ে আতঙ্কিত কিন্তু পাপের
মাধ্যমে প্রতিনিয়ত তার নিকটবর্তী হচ্ছো।
(৭) তোমরা স্বীকার কর মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু তার জন্য
নিজেকে প্রস্তুত কর না।
(৮) তোমরা সর্বদা অন্যের দোষ বের করতে সচেষ্ট
কিন্তু নিজের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে উদাসীন।
(৯) তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ উপভোগ কর কিন্তু তার জন্য
শুকরিয়া আদায় কর না।
(১০) তোমরা মৃতদেহের দাফন সম্পন্ন করার পর তার
থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর না।
আমাদেরও কি ভেবে দেখা উচিৎ নয় আমাদের
অন্তর এসব ব্যাপারে মরে গেছে কিনা?

Wednesday 13 January 2016

১০ অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেয়া উচিৎ নয়!
ইসলামে সালাম একটি শান্তিময়
সম্মানজনক ও অভ্যর্থনামূলক
অভিনন্দন। একদা এক ব্যক্তি নাবী
(সা:) এর নিকটে এসে বললেন,
আসসালামু আলাইকুম। তখন তিনি
বললেন, লোকটির জন্য ১০টি নেকী
লেখা হয়েছে। এরপর আরেক
ব্যক্তি এসে বললেন, ওয়া
রাহমাতুল্লাহ নবীজী (সা.) তার
জওয়াব দিয়ে বললেন, তার জন্য
২০টি নেকী লেখা হয়েছে। অত:পর
আরেক ব্যক্তি এসে বললেন ওয়া
বারাকাতুহু। রাসুলুল্লাহ তারও
জওয়াব দিয়ে বললেন, লোকটির
৩০টি নেকী লেখা হয়েছে। (মিশকাত
হা/৪৬৪৪)
তার মানে দাঁড়ায় আমরা যখন
কাউকে সালাম দেব তখন পুরো
সালামটা শুদ্ধ ভাষায় দেব। কারণ
পূর্ণাঙ্গ সালামের নেকী সংখ্যা
অনেক বেশি। তবে সকল অবস্থায়
সালাম দেয়া যাবে না। এর উপরও
ইসলামে বিধি নিষেধ রয়েছে। যে
সকল অবস্থায় সালাম দেওয়া
উচিত নয়, তা নিচে দেওয়া হলঃ-
) নামাজ পড়া অবস্থায় কোন
ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
) ইস্তিঞ্জারত অবস্থায় কোন
ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৩) অযুরত অবস্থায় কোন
ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৪) খাবার খাওয়া অবস্থায় কোন
ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৫) কোরআন তিলাওয়াত করা
অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম
দেওয়া উচিত নয়।
৬) জিকির ও মোরাকাবায়রত
অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম
দেওয়া উচিত নয়।
৭) ওয়াজ ও নসীহত শুনা অবস্থায়
কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া
উচিত নয়।
৮) তালীমি মজলিসে মসগুল এমন
অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম
দেওয়া উচিত নয়।
৯) আযানরত অবস্থায়
কোনব্যক্তিকে সালাম দেওয়া
উচিত নয়।
১০) হিসাব নিকাশ বা গননায়রত
অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম
দেওয়া উচিত নয়।

Tuesday 12 January 2016

যাকে ভয় করি..!!
তার নাম হাশর...!!!
যাকে বিশ্বাস করি..!!
তার নাম কুরআন...!!!
যার কাছে আমি ঋণী..!!
তার নাম মা...!!!
যাঁকে নেতা মানি...!!
তিনি হলেন রাসূল (স)...!!
যার কাছে মাথা নতকরি..!!
তিনি হলেন আল্লাহ'''!!!

Monday 11 January 2016

একঘন্টা আল্লাহ তায়ালারসৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা ৭০
বৎসরের ইবাদতঅপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।”
 [বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ(সঃ) ]

Sunday 10 January 2016

হিংসা মানুষকে এমনভাবে ধ্বংস করে -- যেভাবে মরিচা
লোহাকে ধ্বংস করে । --- ইবনুল খাতীব
প্রবাসী জীবনে মাগো মনে পড়ে তোমায়।
°°°°°°°°°°°°°°কবিতা°°°°°°°°°°°°°°°°°°
প্রবাসী জীবনে মাগো মনে পড়ে তোমায়।
কত দিন দেখিনা মায়ের মুখ
চোখের জলে ভেসে যায় বুক
মাগো তুমি কেমন আছো বাড়িতে
প্রবাসে মনে পড়ে মাগো.. মন যে চায় দেখিতে।
অশ্রু আমার টলমল করে তোমায় মনে পড়ে
কেঁদে কেঁদে চার/পাঁচটা বছর করিলাম পার তোমায় না দেখে।
করিয়ো দোয়া মাগো আসিবো সামনে
আল্লাহ যদি রাখে তোমায় চাই যে দেখিতে।
যত্ন নিও মাগো তুমি খেয়ো সময়মত...
আল্লাহর কাছে দোয়া আমার দেয় যেন আয়ু বছর শত।

Friday 8 January 2016

আসুন কুরআন ও সহীহ হাদীস মেনে চলি
কিয়ামতে আলামত খন্ড-4
কিয়ামতের আলামত -4
২৭) ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﻟَﺎ ﺗَﻘُﻮْﻡ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔُ ﺣَﺘَّﻰ َﺗَﻜْﺜُﺮَ ﺍﻟﺰَّﻟَﺎﺯِﻝُ
বেশী বেশী ভূমিকম্প না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত
প্রতিষ্ঠিত হবেনামুমিন।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান)। ইমাম
ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) বলেনঃ উত্তর, পূর্ব ও
পশ্চিমাঞ্চলের অনেক দেশেই বহু ভূমিকম্পের
আবির্ভাব হয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রায়ই পত্র-পত্রিকা ও
প্রচার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পের খবর শুনতে
পাই। হতে পারে এগুলোই কিয়ামতের আলামত হিসেবে
প্রকাশিত হয়েছে। যদি তা না হয়ে থাকে তাহলে আমরা
বলবোঃ এসব ভূমিকম্প কিয়ামতের আলামত হিসেবে
প্রকাশিতব্য ভূমিকম্পের প্রাথমিক পর্যায় স্বরূপ| ২০০৫ ইং
সালে শ্রীলংকা,
ইন্দোনেশীয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব
এশীয়ার কয়েকটি দেশে হয়ে যাওয়া সুনামীর ঘটনা
কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার একটি সুস্পষ্ট আলামত।
২৮) ভূমি ধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবেঃ
আখেরী যামানায় যখন অশ্লীলতা ও পাপের কাজ
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে তখন এই উম্মাতের কিছু
লোককে বিভিন্ন প্রকার শাস্তিতে পাকড়াও করা হবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﻳَﻜُﻮْﻥُ ﻓِﻰْ ﺁﺧِﺮِ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻷُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭ ﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ
ﺍﻟﻠَّﻪ ! ﺃَ ﻧُﻬْﻠَﻚُ ﻭَ ﻓِﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤُﻮْﻥَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌْﻢُ , ﺇِﺫﺍ ﻇَﻬَﺮَ ﺍﻟْﺨَﺒَﺚُ
আখেরী যামানায় এই উম্মাতের কিছু লোককে ভূমিধস,
চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে
শাস্তি দেয়া হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ হে
আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে সৎ লোক থাকতেও কি
আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, যখন অশ্লীলতা বৃদ্ধি
পাবেমুমিন।(তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবলি ফিতান, ইমাম আলবানী
সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ
নং ৮০১২)।
তিনি আরো বলেনঃ
ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻱِ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﺧَﺴْﻒٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ
কিয়ামতের পূর্বে ভূমিধস, চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে
উঠিয়ে নিক্ষেপ করার মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবেমুমিন।
(ইবনে মাযাহ, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, সহীহুল জামে আস
সাগীর হাদীছ নং-২৮৫৩)।
আমাদের যামানায় এবং আমাদের পূর্ববর্তী যামানায় পূর্ব ও
পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে অনেক ভূমিধসের ঘটনা সংঘটিত
হয়েছে। এটি কঠিন আযাবের পূর্ব সংকেত এবং আল্লাহর
পক্ষ হতে তাঁর বান্দাদের জন্যে ভীতি প্রদর্শন এবং
গুনাহগার ও বিদআতীদের জন্য শাস্তি স্বরূপ| যাতে
লোকেরা শিক্ষা গ্রহণ করে ও তাদের প্রভুর দিকে
প্রত্যাবর্তন করে এবং এটাও বিশ্বাস করে যে, কিয়ামত অতি
নিকটবর্তী।
গান-বাজনাতে মত্ত এবং মদপানকারীদেরকে উপরোক্ত
শাস্তি প্রদান করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ
ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄُﻣَّﺔِ ﺧَﺴْﻒٌ ﻭَﻣَﺴْﺦٌ ﻭَﻗَﺬْﻑٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻣَﺘَﻰ ﺫَﺍﻙَ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺫَﺍ ﻇَﻬَﺮَﺕِ ﺍﻟْﻘَﻴْﻨَﺎﺕُ ﻭَﺍﻟْﻤَﻌَﺎﺯِﻑُ ﻭَﺷُﺮِﺑَﺖِ ﺍﻟْﺨُﻤُﻮﺭُ
এই উম্মাতের মধ্যে ভূমিধসন, চেহারা বিকৃতি এবং উপর
থেকে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করার শাস্তি আসবে। জনৈক
সাহাবী জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কখন
এরূপ হবে? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বললেনঃ যখন ব্যাপক হারে গায়িকা, বাদ্যযন্ত্র এবং
মদ্যপানের প্রসার ঘটবেমুমিন।(তিরমিযী, অধ্যায়:
আবওয়াদুল ফিতান। সহীহুল আস সাগীর, হাদীছ নং ৪১১৯)।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ
æআমার উম্মাতের একদল লোক মদ্যপানে লিপ্ত হবে।
তবে মদের নাম পরিবর্তন করে অন্য নামে নামকরণ
করবে। তারা বাদ্যযন্ত্র, বাঁশি বাজানো ও গান-বাজনা নিয়ে
ব্যস্ত থাকবে। তাদের কতককে মাটির নীচে দাবিয়ে
দেয়া হবে এবং অন্য এক দলকে শুকর ও বানরে পরিণত
করা হবেমুমিন।
পাপ কাজ ও নাফরমানীতে লিপ্ত হওয়ার কারণে আল্লাহ
তাআলা বনী ইসরাঈলের এক শ্রেণীর লোকের
চেহারা পরিবর্তন করে শুকর ও বানরে পরিবর্তন করে
ধ্বংস করেছিলেন। তবে এই উম্মাতের মাঝে এখনও
চেহারা পরিবর্তনের শাস্তি আসেনি। কিয়ামতের পূর্বে
মানুষ যখন জেনা-ব্যভিচার, মদ্যপান এবং গান-বাজনাসহ নানা
ধরণের পাপের কাজে লিপ্ত হবে তখন এই শাস্তি
অবশ্যই আসবে। কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) সহীহ হাদীছে এ ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী
করেছেন। তা কিয়ামতের পূর্বে অবশ্যই বাস্তবায়িত
হবে।
২৯) পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবেঃ
কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম আলামত হচ্ছে
মুসলমানেরা কেবল পরিচিত লোকদেরকেই সালাম
দিবে।(মুসনাদে আহমাদ। আহমাদ শাকের সহীহ
বলেছেন)। এ বিষয়টি বর্তমান যামানায় সুস্পষ্ট হয়ে দেখা
দিয়েছে। অনেক লোকই পরিচিত ব্যতীত অন্য
কাউকে সালাম দেয়না। এটি সুন্নাত বিরোধী কাজ। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিচিত-অপরিচিত সকল
মুসলিমকেই সালাম দিতে বলেছেন। কেননা সালাম বিনিময়
করা মুসলমানদের ভিতরে ভালবাসা সৃষ্টির অন্যতম মাধ্যম। তিনি
বলেনঃ তোমরা ঈমানদার না হয়ে জান্নাতে যেতে
পারবেনা। আর একে অপরকে ভাল না বাসলে ঈমানদার
হতে পারবেনা। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের
সন্ধান দেবনা যা করলে তোমরা একে অপরকে
ভালবাসতে পারবে? তোমরা বেশী করে সালামের
প্রচলন করোমুমিন।(মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান)।
৩০)
বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবেঃ
কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে মহিলারা ইসলামী
পোষাক পরিত্যাগ করে এমন পোষাক পরিধান করবে
যাতে তাদের সতর ঢাকবেনা। তারা মাথার চুল ও সৌন্দর্য্যের
স্থানগুলো প্রকাশ করে ঘর থেকে বের হবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের
আলামত হচ্ছে মহিলাদের জন্য এমন পোষাক আবিস্কার
হবে যা পরিধান করার পরও মহিলাদেরকে উলঙ্গ মনে
হবেমুমিন।(ইমাম হায়ঝামী বলেন: ইমাম বুখারী এই
হাদীছের বর্ণনাকারীদের থেকে হাদীছ গ্রহণ
করেছেন, মাজমাউজ্ জাওয়ায়েদ, ৭/৩২৭)।অর্থাৎ তাদের
পোষাকগুলো এমন সংকীর্ণ ও আঁট-সাট হবে যে, তা
পরিধান করলেও শরীরের গঠন ও সৌন্দর্যের
স্থানগুলো বাহির থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যাবে।
এই হাদীছটিতে নবুওয়াতের সুস্পষ্ট মু’জেযা রয়েছে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজ থেকে প্রায়
দেড় হাজার বছর পূর্বে যা বলেছেন তা আজ হুবহু
বাস্তবায়িত হয়েছে।
৩১) মুমিনের স্বপ্ন সত্য হবেঃ
কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে আখেরী যামানায়
মুমিন ব্যক্তির স্বপ্ন মিথ্যা হবেনা; বরং ঘুমন্ত অবস্থায় সে যা
স্বপ্নে দেখবে তা সত্যে পরিণত হবে। যার ঈমান যত
মজবুত হবে তার স্বপ্নও তত বেশী সত্য হবে। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﺇِﺫَﺍ ﺍﻗْﺘَﺮَﺏَ ﺍﻟﺰَّﻣَﺎﻥُ ﻟَﻢْ ﺗَﻜَﺪْ ﺭُﺅْﻳَﺎ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻢِ ﺗَﻜْﺬِﺏُ ﻭَﺃَﺻْﺪَﻗُﻜُﻢْ ﺭُﺅْﻳَﺎ ﺃَﺻْﺪَﻗُﻜُﻢْ
ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻭَﺭُﺅْﻳَﺎ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻢِ ﺟُﺰْﺀٌ ﻣِﻦْ ﺧَﻤْﺲٍ ﻭَﺃَﺭْﺑَﻌِﻴﻦَ ﺟُﺰْﺀًﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨُّﺒُﻮَّﺓِ ﻭَﺍﻟﺮُّﺅْﻳَﺎ
ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٌ ﻓَﺮُﺅْﻳَﺎ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤَﺔِ ﺑُﺸْﺮَﻯ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭُﺅْﻳَﺎ ﺗَﺤْﺰِﻳﻦٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻭَﺭُﺅْﻳَﺎ
ﻣِﻤَّﺎ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺍﻟْﻤَﺮْﺀُ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻓَﺈِﻥْ ﺭَﺃَﻯ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻣَﺎ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻢْ ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ ﻭَﻟَﺎ
ﻳُﺤَﺪِّﺙْ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ
যখন কিয়ামত নিকটবর্তী হবে তখন মুমিন ব্যক্তির স্বপ্ন
মিথ্যা হবেনা। যে মুমিন মানুষের সাথে কথা-বার্তায়
সত্যবাদী হবে তাঁর স্বপ্ন বেশী সত্যে পরিণত হবে।
মুমিনের স্বপ্ন নবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের একভাগের
সমান। স্বপ্ন তিন প্রকার। (১) মুমিনের সত্য স্বপ্ন আল্লাহর
পক্ষ হতে সুসংবাদ স্বরূপ| (২) যে সমস্ত স্বপ্ন মনের
ভিতর দুশ্চিন্তা আনয়ন করে তা শয়তানের পক্ষ থেকে।
(৩) আর এক প্রকারের স্বপ্ন অন্তরের কল্পনা মাত্র।
সুতরাং তোমাদের কেউ যদি স্বপ্নে অপছন্দনীয় কিছু
দেখে সে যেন বিছানা থেকে উঠে নামাযে দাঁড়িয়ে
যায় স্বপ্নের কথা কারো কাছে প্রকাশ না করেমুমিন।
(মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুত তা’বীর)।
ইবনে আবি হামজাহ বলেনঃ আখেরী যামানায় মুমিনের
স্বপ্ন সত্য হওয়ার অর্থ এই যে, অধিকাংশ সময় স্বপ্নে যা
দেখেছে তাই বাস্তবে পরিণত হবে। স্বপ্নের ব্যাখ্যার
প্রয়োজন হবেনা। অথচ ইতিপূর্বে তা অস্পষ্ট হওয়ার
কারণে ব্যাখ্যার প্রয়োজন হতো। ফলে কখনও ব্যাখ্যার
বিপরীত হতোমুমিন।
শেষ যামানায় স্বপ্ন সত্যে পরিণত হওয়ার কারণ এই যে
তখন মুমিন লোকের সংখ্যা কমে যাবে। ফলে সে
সময় মুমিন ব্যক্তি কোন সহযোগী
ও শান্তনা দানকারী খুঁজে পাবেনা। তাই সত্য স্বপ্নের
মাধ্যমে তাকে শান্তনা দেয়া হবে।(ফাতহুল বারী,
১২/৪০৬)।
কোন্ যামানায় মুমিনের স্বপ্নসত্যে পরিণত হবে তার
ব্যাপারে আলেমদের কয়েক ধরণের বক্তব্য
রয়েছেঃ
ক) এটি হবে কিয়ামতের পূর্বে যখন ইল্মে দ্বীন
উঠিয়ে নেয়া হবে, ইসলামী শরীয়তের নাম-নিশানা
মিটে যাবে এবং ফিতনা-ফাসাদ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হবে।
খ) আখেরী যামানায় যখন মুমিনের সংখ্যা কমে যাবে এবং
কুফর, পাপাচারিতা ও মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে তখন মুমিনের
স্বপ্ন সত্যে পরিণত হবে। মুমিন লোকের সংখ্যা কমে
যাওয়ার কারণে এক সময় তারা একাকীত্ব অনুভব করবে
এবং নিজেদেরকে অসহায় মনে করবে। অন্য একজন
মুমিনের সাথে বসে কথা বলার এবং মনের ভাব বিনিময় করার
মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। এহেন কঠিন
পরিস্থিতে স্বপ্নের মাধ্যমে মুনিদেরকে শান্তনা প্রদান
করা হবে।
গ) এটি হবে আখেরী যামানায় ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে
নেমে আসার পর। কারণ খোলাফায়ে রাশেদার যুগের
পর ঈসা (আঃ)এর যামানা হবে সর্বোত্তম যামানা। সে
যুগের মানুষ অত্যন্ত সত্যবাদী হবে। কাজেই তাদের
স্বপ্নও সত্য হবে। (আল্লাহই ভাল জানেন)
৩২) সুন্নাতী আমল সম্পর্কে গাফিলতী করবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের
কেঊ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন বসার
পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়ে নেয়| (মুসলিম, অধ্যায়:
মুসাফিরের সলাত)| কিছু সংখ্যক লোক ব্যতীত কিয়ামতের
পূর্ব মুহূর্তে মুসলমানেরা এই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতটির উপর
আমল ছেড়ে দিবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের আলামত হচ্ছে লোকেরা
মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করবে কিন্তু তাতে দু-রাকাত
নামায পড়বেনা।( সহীহ ইবনে খুজায়মা। ইমাম আলবানী
হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন। সিলসিলায়ে সহীহা
হাদীছ নং ৬৪৯)।
৩৩) নতুন মাসের চাঁদ উঠার সময় বড় হয়ে উদিত হবেঃ
মাসের প্রথম দিন আমরা চাঁদকে একেবারে চিকন ও সরু
অবস্থায় উঠতে দেখি। কিন্তু কিয়ামতের নিকটবর্তী
সময়ে চাঁদ প্রথম দিনেই অনেক বড় হয়ে উদিত হবে।
দেখে মনে হবে এটি দুই দিন বা তিন দিনের চাঁদ। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামত নিকটবর্তী
হওয়ার আলামত হচ্ছে, চন্দ্র মোটা হয়ে উদিত হবে। বলা
হবে এটি দুই দিনের চাঁদমুমিন।(তাবরানী, ইমাম আলবানী
হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস
সাগীর হাদীছ নং-৫৭৭৪)।
৩৪) মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবেঃ
কিয়ামতের পূর্বে ব্যাপকভাবে মিথ্যা কথা বলার প্রচলন
ঘটবে। এমনকি এক শ্রেণীর লোক নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামে মিথ্যা হাদীছ রচনা করে
মানুষের মাঝে প্রচার করবে। বাস্তবে তাই হয়েছে।
ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের নামে বানোয়াট কিচ্ছা-
কাহিনী ও জাল হাদীছ তৈরী করে এক শ্রেণীর
লোক মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আখেরী যামানায় আমার
উম্মাতের কিছু লোক তোমাদের কাছে এমন কথা
বর্ণনা করবে, যা তোমরাও শুননি এবং তোমাদের বাপ-
দাদারাও শুনেনি। তোমরা তাদের থেকে সাবধান থাকবে।
তারা যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে না পারেমুমিন।
(মুসলিম, মুকাদ্দিমা)।হাদীছের ভাষ্য সত্যে পরিণত
হয়েছে। বর্তমানকালে মানুষের মাঝে মিথ্যা কথা বলার
অভ্যাস ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি বলা হয়
বর্তমানে একজন সত্যবাদী খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন
তাতেও অতিরঞ্জিত হবেনা বলে মনে হয়। যাচাই-বাছাই না
করেই মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যে মিথ্যা সংবাদ প্রচার
করতে লোকেরা মোটেও দ্বিধাবোধ করেনা।
প্রচার মাধ্যমগুলো অনবরত মিথ্যা সংবাদ প্রচার করার কারণে
সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যায়।
৩৫) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻱِ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ﺷَﻬَﺎﺩَﺓَ ﺍﻟﺰُّﻭﺭِ ﻭَﻛِﺘْﻤَﺎﻥَ ﺷَﻬَﺎﺩَﺓِ ﺍﻟْﺤَﻖِِّ
কিয়ামতের পূর্বে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে এবং
সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হবেমুমিন।(মুসনাদে আহমাদ।
আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন)।বর্তমান সমাজে
সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন
ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। অপর পক্ষে সত্যের
সাক্ষী দেয়ার লোক খুব কমই পাওয়া যায়।
৩৬) মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে
যাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﻣِﻦْ ﺃَﺷْﺮَﺍﻁِ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ﺃَﻥْ َﺗَﻜْﺜُﺮَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﻭَﻳَﻘِﻞَّ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﻟِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ
ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﺍﻟْﻘَﻴِّﻢُ ﺍﻟْﻮَﺍﺣِﺪ
কিয়ামতের আলামত হচ্ছে, মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং
পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। এমনকি পঞ্চাশ জন মহিলার
দেখা-শুনার জন্যে মাত্র একজন পুরুষ থাকবেমুমিন।
(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ইলম)।এই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলা
হয়েছে যে, কিয়ামতের পূর্বে ফিতনার সময় ব্যাপক
যুদ্ধ হবে। যুদ্ধে যেহেতু কেবল পুরুষেরাই অংশগ্রহণ
করে থাকে তাই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পুরুষেরা
অকাতরে নিহত হবে। ফলে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা
বৃদ্ধি পাবে।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) এই মতটিকে প্রত্যাখ্যান
করে বলেনঃ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থ হলো কোন
কারণ ছাড়াই শুধু কিয়ামতের আলামত হিসেবে নারীর সংখ্যা
বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ তাআলা আখেরী যামানায় পুরুষের
তুলনায় বেশী নারী সৃষ্টি করবেন। বর্তমানেও এ
আলামতটি প্রকাশিত হয়েছে। কোন কোন দেশে
জরিপ করে দেখা গেছে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা
অনেক বেশী। ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে।
মোটকথা স্বভাগত ও যুদ্ধ উভয় কারণে পুরুষের সংখ্যা
কমতে পারে।
৩৭) হঠাৎ মৃত্যুর বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের
অন্যতম আলামত হচ্ছে হঠাৎ করে মৃত্যুবরণকারীর সংখ্যা
বৃদ্ধি পাবেমুমিন।(মাযমাউয্ যাওয়ায়েদ ৭/৩২৫, সহীহুল
জামে আস-সাগীর, হাদীছ নং ৫৭৭৫)।
বর্তমানে এরকম ঘটনা প্রায়ই শুনা যায়। দেখা যায় একজন
মানুষ সম্পূর্ণ সুস্থ। হঠাৎ শুনা যায় সে মৃত্যু বরণ করেছে।
সুতরাং মানুষের উচিৎ মৃত্যু আসার পূর্বেই আল্লাহর কাছে
তাওবা করা এবং সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা।
৩৮) আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে
যাবেঃ
বর্তমানে আরব উপদ্বীপে কোন নদী-নালা নেই।
গাছপালার সংখ্যা খুবই কম। চাষাবাদের উপযোগী ভূমির
পরিমাণ অতি নগণ্য। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে আরব
উপদ্বীপের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং তা
গাছপালা ও নদী-নালায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
ﻟَﺎ ﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔُ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻌُﻮﺩَ ﺃَﺭْﺽُ ﺍﻟْﻌَﺮَﺏِ ﻣُﺮُﻭﺟًﺎ ﻭَﺃَﻧْﻬَﺎﺭًﺍ
ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যে পর্যন্ত না
আরব উপদ্বীপ গাছপালা ও নদী-নালায় পূর্ণ হবে।(মুসলিম,
অধ্যায়: কিতাবুয যাকাত)।হাদীছের প্রকাশ্য বর্ণনা থেকে
বুঝা যাচ্ছে যে আরব দেশসমূহে কিয়ামতের পূর্বে
পানির অভাব হবেনা। তাতে প্রচুর পরিমাণ নদী প্রবাহিত
হবে। ফলে গাছ-পালা ও নানা উদ্ভিদ উৎপন্ন হবে এবং বন-জঙ্গলে ভরে যাবে।
হাদীস পড়ুন সুন্দর জীবন গড়ুন 
পেইজ টিতে লাইক দিয়ে এক্টিভেট থাকুন আমাদের পেইজটি সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো,
অলৌকিক গ্রন্থ আল কুরআন
মানবের জন্য আল্লাহর পক্ষ
থেকে শ্রেষ্ঠতম উপহার।
এটি যেমন এর বিষয়বস্তুর দিক থেকে এককভাবে বিজয়ী, তেমনি এই মহাগ্রন্থের আছে
অতুলনীয় উচ্চারণ। আল কুরআন তিলাওয়াত এর
মোজেজার সাথে গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত।
এ ব্যাপারে বহু উপমা আছে। একটি নিদর্শন
সূরা নাজমের প্রথম ঐতিহাসিক মুহূর্তটি।
কাবাপ্রাঙ্গণে প্রথমবার আল্লাহর রাসূল সা:
সূরাটি পড়া শেষ করার পর উপস্থিত সব কাফের
অবচেতনভাবে নিজেদের অজান্তে
সম্মিলিতভাবে রাসূল সা:-এর সাথে সেজদা
করে, যদিও তারা ঈমান আনেনি। এটা শুধু
কুরআনের তত্ত্বীয় প্রভাবে নয়, এর
আবৃত্তিরও প্রচণ্ড প্রভাব ছিল। আমরা স্মরণ
করতে পারি, আল্লাহর নবী হজরত দাউদ আ:
মানবজাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম কারি। এমনকি
পাখি ও পর্বত তাঁর সালাতের সাথে তাঁকে
অনুসরণ করত (সূরা আম্বিয়া : ৭৯; সূরা সাবা : ১০;
সূরা সাদ : ১৮, ১৯)
আল্লাহর রাসূলের অনেক সাহাবিও অসাধারণ
কালাম উপস্থাপক ছিলেন। একটি আকর্ষণীয়
হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, ‘তাঁর
সাহাবি আবু মূসা আশয়ারি রা: আল্লাহর রাসূল দাউদ
আ:-এর কণ্ঠের একটি অংশ
পেয়েছেন’ [বুখারি : ৪৬৭৫; মুসলিম : ১৭২৮,
১৭২৯) আল কুরআনে তিলাওয়াত পরিভাষাটির
ওপরে প্রধানত তিনটি সমার্থক শব্দ ব্যবহার করা
হয়েছে। যেমনÑ ‘কিরাত’ থেকে ‘ইকরা’,
‘তিলাওয়াত’ থেকে ‘উতলু’ এবং ‘রাতালা’
থেকে ‘রাত্তিল’ ইত্যাদি। পরিভাষাগুলোর অর্থ
ও তাৎপর্য প্রায় কাছাকাছি। যেমনÑ
সামঞ্জস্যপূর্ণ পাঠ, যথাযথ উচ্চারণ, সুনিয়ন্ত্রিত
ও উচ্চকিত আওয়াজ, গবেষণা, অনুসন্ধান,
সুললিত পাঠ ইত্যাদি।
দিসে কুরআন আবৃত্তি সম্পর্কে নির্দেশনা :
হাদিস গ্রন্থগুলোতে কুরআন আবৃত্তি
সম্পর্কে আলাদা চ্যাপ্টার আছে। এ ছাড়া
সালাত, রমজান ও তাফসির অধ্যায়গুলোতেও এ
সংক্রান্ত মৌলিক দিকনির্দেশনা মজুদ আছে।
হাদিসগুলো বেশ ব্যাপক, মনোমুগ্ধকর,
অন্তরে আলোড়ন সৃষ্টিকারী, অসাধারণ
জীবন্ত। রাসূল সা:-এর সময়ে কিরাত চর্চাই
ছিল সবচেয়ে উপভোগ্য কালচার। সুতরাং এ
বিষয়টিকে নিছক নফল ইবাদতের দৃষ্টিতে
দেখা ঠিক হবে না, এটি ইসলামী সংস্কৃতির
একটি মৌলিক বিভাগ। কয়েকটি উদাহরণ: কুরআন
তিলাওয়াত এবং মাহে রমজান : ‘প্রতি রমজানে
আল্লাহর বাণীবাহক ফেরেশতা জিব্রাইল আ:
আল্লাহর রাসূল সা:কে একবার কুরআন আবৃত্তি
করে শোনাতেন। আবার আল্লাহর রাসূল
সা:ও জিব্রাইল আ:কে একবার আবৃত্তি করে
শোনাতেন’ [বুখারি : ৪৬২৬, ৪৬২৭]।
শেষোক্ত হাদিসে অতিরিক্ত বলা হয়েছে,
‘রাসূলুল্লাহ সা: ইন্তেকালের বছর জিব্রাইল
আ: কাজটি দুইবার করেন।’ কুরআনের অব্যাহত
চর্চার গুরুত্বের বিষয়ে এ ঘটনাটি মৌলিক
নির্দেশনা প্রদান করে।
হাদিস দু’টিতে তিলাওয়াত বা কিরাত বোঝাতে
‘আরদ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ‘আরদ’
একটি ব্যাপক অর্থবোধক পরিভাষা। এর মানে
অনুভূতির প্রকাশ, সাজানো, উপস্থাপন,
প্রদর্শনী, দৃশ্যায়ন, ব্যাখ্যাকরণ ইত্যাদি। তার
মানে আমাদেরকে সাধ্যানুযায়ী এমনভাবে
তিলাওয়াতের চেষ্টা করতে হবে, যাতে
কুরআনের বিভিন্ন চ্যাপ্টার ও আয়াত পড়ার সময়
সংশ্লিষ্ট অংশের অর্থ, মর্ম ও চিত্র প্রকাশিত
হয়। আর এই প্রশিক্ষণই রোজার সময় নবী
সা:-কে দেয়া হতো।
জনৈক সাহাবির কিরাত শুনে ফেরেশতাদলের
আগমন : একটি লম্বা হাদিসের সারাংশ- হজরত
উসাইদ ইবনে হুদাইর রা: এক রাতে সূরা বাকারা
পড়ছিলেন, তিনি আকাশে আলোকিত
মেঘের মতো দেখতে পান, অতঃপর পড়া
বন্ধ করেন। সকালে রাসূলুল্লাহ সা:কে
অবহিত করলে তিনি উসাইদ রা:কে আশ্বস্ত
করলেন যে, ‘আলোকিত মেঘপুঞ্জ ছিল
মূলত ফেরেশতা। পড়া বন্ধ না করলে
ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত থাকত এমনকি
জনসাধারণও তাদেরকে দেখতে
পেত।’ [মুসলিম : ১৭৩৬) একই রকম আরো
চারটি হাদিস আছে, যেখানে নামছাড়া এক সাহাবি
এবং সূরা কাহাফের কথা উল্লেখ করা
হয়েছে [মুসলিম : ১৭৩৩-১৭৩৫, বুখারি : ৪৬৩৯)
কুরআন পড়ার প্রধান পদ্ধতি হতে পারে
কোনটি : অঞ্চল ও ব্যক্তিভেদে কিতাব
পাঠের ও শোনার ব্যাপারে পছন্দের
পার্থক্য দেখা যায়। অতি ধীর (আমাদের
দেশে কারিয়ানা স্টাইল বলে পরিচিত), অতি
দ্রুত এবং মধ্যম গতিÑ প্রধানত এই তিন ধরনের
পঠনরীতি আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে
দেখতে পাই।অতি ধীরের পদ্ধতিটি শৈল্পিক
দৃষ্টিতে উন্নত, কিন্তু তা অধ্যয়ন, গবেষণা ও
দাওয়াতি কাজে খুব বড় ধরনের ভূমিকা রাখে না।
তবে ইসলাম শিল্প ও সৌন্দর্যকে সমর্থন ও
উৎসাহিত করে, অতএব এটা গ্রহণীয়।
মধ্যম গতির কুরআন তিলাওয়াতের অনবদ্য
বৈশিষ্ট্য : মধ্যম গতির উচ্চারণ খুব ধীরে নয়,
দ্রুতও নয়। যেন সুবাসিত আলোয়
ঝরনাপ্রবাহ, নদীর মতো বয়ে চলা,
কখনো বা সাগরের ঢেউ, আবার ঝরঝর
বৃষ্টি; কখনো মনে হয় দূর থেকে
কোনো সুর ভেসে আসছে; কে
যেন দূর থেকে ডাকছে; মৃদুমন্দ বাতাসের
প্রবাহ, আবার ঝড়ের মতো; শব্দগুলো
বুঝতে কোনো সমস্যা হয় না, আয়াত আর
শব্দের প্রকৃতি অনুযায়ী ছন্দ ও গতির
পরিবর্তন। এই ছন্দ একই সাথে তিনটি বিষয়কে
সম্পন্ন করে শিল্প ও সৌন্দর্য, পড়া ও
অধ্যয়ন এবং দাওয়াতি কাজ। তাই কুরআন
তিলাওয়াতের মূল উপকারিতা পেতে এই
পদ্ধতিকেই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
অতি দ্রুত কুরআন পাঠের সংস্কৃতি থেকে
বিরত হওয়া উচিত : অতি দ্রুত পঠনপদ্ধতিতে
কালামুল্লাহর শব্দগুলো বোঝা যায় না,
অনেক সময় ভুল ও বিকৃত উচ্চারণও করা হয়।
এটা কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে
কোনোভাবেই গ্রহণীয় নয়, বরং এভাবে
কুরআনের প্রতি একপ্রকার অবমাননাই করা হয়।
হাদিসে আরবদেরও তিন দিনের কমে
কুরআন খতম করতে নিষেধ করা হয়েছে।
সুতরাং বড় বড় ইমাম ও দরবেশগণ বছরের পর
বছর প্রতি রাতে কুরআন খতম করতেন
বলে যেসব কথা বলা হয়, তার কোনো
শরয়ি কিংবা বাস্তব ভিত্তি নেই। যেমনÑ ইমাম
আবু হানিফা সম্পর্কে বলা হয়, তিনি নাকি একটানা
৩৬ বছর এক অজুতে এশা ও ফজর
পড়েছেন এবং প্রতি রাতে পুরো কুরআন
পড়তেন। এটা মূলত ইমামের প্রতি মিথ্যাচার
ছাড়া আর কিছু নয়।আমরা হাদিসে দেখতে পাই,
একজন সাহাবির কিরাত শুনতে
ফেরেশতাদলের আগমন ঘটেছিল। এ
ব্যাপারে সূরা বাকারা ও সূরা কাহাফের বর্ণনা পাওয়া
যায়। তিনি কুরআন খতম করছিলেন, এমনটি আমরা
দেখছি না। [মুসলিম : ১৭৩৬, ১৭৩৩-১৭৩৫, বুখারি
: ৪৬৩৯) আল কুরআন ও তাফসির অধ্যয়নের
ফলদায়ক পদ্ধতি প্রসঙ্গে : আল কুরআন
অধ্যয়নের শুরুতেই পুরো গ্রন্থটি শুরু
থেকে শেষ অবধি একবার পড়ে নেয়া
জরুরি। প্রথমে শুধু তরজমা ও গুরুত্বপূর্ণ
টীকা বা তাফসির পড়াই যথেষ্ট। দ্বিতীয়
পর্যায়ে শব্দার্থসহ আবার পুরো কুরআনটি
আগাগোড়া দেখতে হবে। এর পরই
ব্যাপকভিত্তিতে তাফসির শুরু করা ভালো।প্রথম
দুই পর্যায়ের অধ্যয়ন আকর্ষণীয় তিলাওয়াত
শোনার সাথে সাথে সম্পন্ন করলে
কুরআন আয়ত্ত হবে কয়েকগুণ, আপনি
নিজেই চমকে যাবেন। প্রতিটি সূরা ৫-১০ বার
শোনা এবং একইসাথে শব্দানুবাদসহ দেখা
যেতে পারে। বেশি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ও
আয়াত চিহ্নিত করা জরুরি। পদ্ধতিটিকে এক কথায়
বলা যায় এভাবে, ‘তিলাওয়াত শ্রবণ এবং শব্দানুবাদ
দর্শন’। এভাবে এক বছরের মধ্যে আমরা
পুরো কিতাবের ওপর সাধারণ একটা দখল
অর্জন করতে পারব। অতঃপর আমরা
ব্যাপকভাবে তাফসির পড়া শুরু করতে পারি।
শব্দানুবাদকে মৌলিকভাবে গুরুত্ব দিতে হবে :
শব্দানুবাদ ছাড়া কুরআনের পূর্ণ সৌন্দর্য
অবলোকন করা সম্ভব নয়, এই মহাগ্রন্থের
অলৌকিক সাহিত্যের সুগন্ধ অনুভবের জন্যও
এটা প্রয়োজন। পৃথিবীতে এখন নানা ভাষায়
ব্যাপকভাবে কুরআনের তরজমা উপস্থাপন
করা হচ্ছে। শব্দানুবাদকেও মৌলিকভাবে গুরুত্ব
দিতে হবে। এটা অস্বাভাবিক ও জটিল
কোনো বিষয় নয়। আর ‘লাইন বাই লাইন’
অর্থাৎ ‘আয়াত বাই আয়াত’ অনুবাদের সাথে
সাথে একই সময়ে শব্দানুবাদের কাজটি করা
সম্ভব।হারামাইন ওয়েবসাইট ভিজিটের বিশেষ
বেনিফিট : একটা দিক হলো সালাত কিরাতের
একটা বিশেষ স্টাইল আছে, সেটা আয়ত্ত
করতে সহায়ক। আরেকটি দিক হলো,
পুরো কুরআন সর্বদা স্মৃতিতে ধরে রাখা
সহজ নয়, এতটা উঁচু পর্যায়ের স্মৃতিশক্তি কম
লোকেরই রয়েছে। হারামাইন ইমামগণ
আল্লাহর কালামের সব চ্যাপ্টার থেকেই
সালাত কিরাত পেশ করেন। অনেক সময় দুই
রাকাতের জন্য দু’টি ভিন্ন সূরা থেকে
সমধর্মী বা পরিপূরক কিছু আয়াত বাছাই করা হয়।
এটা কুরআন বুঝতে খুবই সহায়ক।
আল কুরআন হিফজ করা সম্পর্কে কিছু কথা :
যেকোনো আমলে সালেহের
ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহর নীতিমালাকে
অনুসরণ করা ঈমানদারদের জন্য বাধ্যতামূলক,
সেটা নফল ইবাদত হোক অথবা ফরজ ইবাদত।
আল্লাহর কালাম হিফজের ব্যাপারে আমরা
ইসলামে দুই ধরনের দিকনির্দেশনা পাই। একটি
সতর্কতামূলক, অন্যটি উৎসাহব্যঞ্জক।
নবুওয়তের প্রথম কয়েক বছর, আল্লাহর
রাসূল সা: কালাম মুখস্থ করার জন্য অনেক সময়
খুব ব্যস্ত হয়ে পড়তেন, এমনকি ওহি
নাজিলের মুহূর্তেও এটা পরিলক্ষিত হতো।
‘আল্লাহ পাক তাঁকে কিতাব হিফজের ব্যাপারে
অতি ব্যস্ত হতে নিষেধ করেন এবং একই
সাথে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি তাঁকে
সহজেই মুখস্থ করিয়ে দেবেন’ (সূরা তহা :
১১৪, কিয়ামাহ : ১৬-২০, আলা : ৬-৭) সাদ ইবনে
উবাদা রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা:
বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআন মুখস্থ করার
পর তা ভুলে যায়, সে কিয়ামতের দিন
আল্লাহর সাথে খালি হাতে সাক্ষাৎ
করবে’ (আবু দাউদ : ১৪৭৪)
আসলে বিষয়টি খুবই বিজ্ঞানসম্মত। কারণ সব
মানুষের যোগ্যতা সমান নয়। কেউ
কোনো বিষয়ে অস্বাভাবিকভাবে উৎসাহী
হয়ে পড়লে তার সামগ্রিক জীবনের
ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর ইসলাম তো
ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, তাই এই
সতর্কতামূলক নির্দেশনা। ইসলাম চায় মানুষ যে
কাজটিই করুক, সুন্দরভাবে করুক। ভারসাম্যহীন
অনেক আমলের চেয়ে যথাযথ অল্প
আমল তাই আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়) আবু
সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা:
বলেছেন, ‘কুরআনের সাথীকে
জান্নাতে প্রবেশকালে বলা হবে, পড় এবং
উঠতে থাক। অতঃপর সে প্রতিটি আয়াত পড়ার
সাথে সাথে এক একটি স্তর অতিক্রম করতে
থাকবে যতক্ষণ না তার জানা সর্বশেষ আয়াতটি
পড়বে’ (ইবনে মাজা : ৩৭৮০)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা: থেকে বর্ণিত,
নবী সা: বলেছেন, ‘কুরআনের
সাথীকে বলা হবে, পড়, আরোহণ কর ও
তারতিলের সাথে পড়, যেভাবে তুমি
দুনিয়াতে পড়তে। অতএব যে আয়াত
তোমার পড়া শেষ হবে সেটিই হবে
তোমার স্থান (জান্নাতে), (তিরমিজি : ২৯১৪,
আবু দাউদ : ১৪৬৪, মিশকাতুল মাসাবিহ : ২০৩১,
তারগিব-তারহিব; কুরআন পাঠ অধ্যায়, ১ম
অনুচ্ছেদ : ১৬) উল্লেখ্য, মিশকাত ও
তারগিব-তারহিব গ্রন্থদ্বয়ে হাদিসটির আরো
কয়েকটি তথ্যসূত্রের কথা বলা হয়েছে।
যথা- নাসায়ি, আহমদ ও ইবনে হিব্বান) আবু হুরায়রা
রা: কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা:
বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন যখন কুরআনের
বাহক আসবে, তখন কুরআন আবেদন
করবে, হে আমার রব! একে অলঙ্কৃত
করুন। তখন তাকে সম্মানের মুকুট পরানো
হবে। সে আবার বলবে, হে আমার রব!
তাকে আরো বাড়িয়ে দিন। তখন তাকে
সম্মানের পোশাক পরানো হবে। সে
আবার আবেদন করবে, হে আমার
পরওয়ারদিগার তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। তখন
আল্লাহ তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। তখন
তাকে বলা হবে, পড় ও ওপরে উঠতে থাক।
অতঃপর প্রতিটি আয়াতের বিনিময়ে তার জন্য
প্রতিদান বাড়তে থাকবে’ (তিরমিজি : ২৯১৫,
তারগিব-তারহিব, কুরআন পাঠ অধ্যায়, ১ম
অনুচ্ছেদ : ১৫)। তারগিব-তারহিব গ্রন্থে বলা
হয়েছে, হাদিসটি ইবনে খুজায়মা ও হাকিমেও
বর্ণিত হয়েছে।
কুরআন মুখস্থ করার একটি দারুণ প্রক্রিয়া : এটা
বুঝতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়,
আরবদের জন্য কালাম হিফজ করা বেশি সহজ,
যেহেতু এটা তাদের মাতৃভাষা। তবে বর্তমান
ডিজিটাল গ্লোবাল ভিলেজে এটা গোটা
বিশ্ববাসীর জন্যই নরমাল বিষয়ে পরিণত
হয়েছে। কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার
করে বারবার শোনার মাধ্যমে দ্রুত মুখস্থ
করা সম্ভব, আর শব্দানুবাদ ফলো করলে
কাজটা আরো ত্বরান্বিত হয়ে যাবে।আমার
অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই প্রক্রিয়ায়
বছরে ৪০০-৫০০ আয়াত মুখস্থ করা সবার
পক্ষেই সম্ভব, যদি টার্গেট নেয়া হয়।
এভাবে ১০-১২ বছরের মধ্যে পুরো
কুরআন মুখস্থ করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
হ্যাঁ, এটা ফরজ দায়িত্ব নয়; তবে আমাদের
স্মরণ করা উচিত, কুরআন তিলাওয়াত ছিল রাসূল
সা:-এর যুগে সর্বাধিক প্রভাবশালী
আনন্দদায়ক কালচার।শেষ কথা : মহাগ্রন্থ আল
কুরআনের অলৌকিকত্বের যথার্থ
অবলোকন এবং আমাদের পবিত্র মুখ দিয়ে
তার যথার্থ উচ্চারণের জন্য শব্দানুবাদসহ
কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াত চর্চা করা খুবই
জরুরি। আর বর্তমান ডিজিটাল যুগে এ কাজটি
অত্যন্ত সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।=
সমাপ্ত=

Wednesday 6 January 2016

শিক্ষণীয় গল্প 
একদিন চলার পথে হযরত উমরের (রাঃ)
সাথে এক বৃদ্ধার দেখা হল।
কথা প্রসঙ্গে উমর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন,
'আমীরুল মুমিনীন সম্পর্কে তোমার
ধারণা কি?' বৃদ্ধা উমর (রাঃ) কে চিনতেন
না। সে নির্বিঘ্নে বলল, 'সে মোটেও ভাল মানুষ নয়।
আমি অতি কষ্টে আছি,
খলীফা আমার কোন খবর নেয়নি।' উমর
(রাঃ) বললেন, 'তুমি খলীফাকে তোমার
অবস্থার কথা কেন বলোনি?
তাঁকে না জানালে তিনি কি করে জানবেন?
বৃদ্ধা মহিলাটি বলল, 'খলীফার দায়িত্ব প্রজাদের
খোঁজ খবর রাখা।' উমর (রাঃ)
বললেন, 'হে মা! কি পরিমাণ অর্থ
পেলে তোমার দুঃখ ঘুচবে আর
তুমি খলীফাকে ক্ষমা করে দিবে?' সে সময়
হযরত আলী (রাঃ) ও আবদুল্লাহ
ইবনে মাসউদ (রাঃ) সে পথ দিয়ে যেতে খলীফাকে
'আমীরুল মুমিনীন'
বলে সম্বোধন করে সালাম দিলেন।
বৃদ্ধা মহিলাটি ভয়ে কেঁপে উঠলো। উমর
(রাঃ) তাকে সান্ত্বনা দিয়ে ৫০০
স্বর্ণমুদ্রা তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন,
'খলীফার বিরুদ্ধে তোমার আর কোন অভিযোগ আছে
কিনা?' তিনি বললেন, 'না'।
হযরত উমর (রাঃ) এক খন্ড চামড়ার উপর
কথাটি লিখিয়ে নিলেন, 'কিয়ামতের দিন
আল্লাহ তাআলার দরবারে আমীরুল মুমিনীন
হযরত উমরের বিরুদ্ধে আমার আর কোন
অভিযোগ নেই।' হযরত আলী তাতে সাক্ষিরূপে
সাক্ষর করলেন। এ ঘটনা সকল মানুষের জন্য বিশেষ
করে দায়িত্বশীল লোকেদের জন্য
দায়িত্বানুভূতির এক চিরন্তন আদর্শ।
আল্লাহ আমাদের সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার তৌফীক দাও
যে ধরণের মুসলিম নারীর নামাজ কবুল হয় না !


নামায, নামাজ বা সালাত হল ইসলাম ধর্মের প্রধান উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত (নির্দিষ্ট নামাযের নির্দিষ্ট সময়) নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামায ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। শাহাদাহ্ বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। নামাজ হলো মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নর-নারী উভয়ের জন্যেই নামাজ ফরয করা হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু মুসলিম নারী আছেন যাদের নামাজ কবুল হয় না। চলুন কোন ধরণের মুসলিম নারীর নামাজ কবুল হয় না তা হাদিসের আলোকে জেনে নিই- 

১. নবী কারীম সা. এরশাদ করেন, সেই মহিলার কোন নামাজ কবুল হয় না যে তার স্বামী ছাড়া অন্য কারোর জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং যতক্ষণ না সে নাপাক ব্যক্তির মতো গোসল হয়ে পবিত্র না হয়, ততক্ষণ তার নামাজ কবুল হবে না। (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ,সিলসিলাতুস সাহীহা : হা. ১০৩১) 

২. অন্য একটি হাদিসে নবী কারীম সা. এরশাদ করেন, সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী সে যাকে দেখলে মন খুশিতে ভরে ওঠে, তাকে আদেশ করলে সত্বর তা পালন করে, স্বামী বাহিরে গেলে নিজের দেহ, সৌন্দর্য ও ইজ্জতের এবং স্বামীর সম্পদের যথার্থ রক্ষণা বেক্ষণ করে। (মুসনাদে আহমদ : ২/২৫১, নাসাঈ : হা. ৩২৩১)

Monday 4 January 2016

একজন লোক মাত্র বিয়ে করে তার
স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরছি
তারা যখন নৌকা দিয়ে সাগর পাড়
হচ্ছিল, তখন হঠাৎ একটি বড় ঝড়ের
কবলে পড়েছিল।
লোকটি ছিল একজন সাহসী যোদ্ধা,
কিন্তু তার স্ত্রী খুব ভীত
হয়ে ওঠে যেহেতু নৌকাটি ছিল ছোট
এবং যে কোন মুহূর্তে তারা নিমজ্জিত
হতে যাচ্ছে এতে সে খুব নিরাশ
হয়ে পড়ল।
কিন্তু
লোকটি তখনও নীরব এবং শান্ত ছিল
যেন কিছুই ঘটেনি।
মহিলার আতঙ্কগ্রস্ত এবং কম্পিত
কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, “আপনি কি ভীত
নন ?”। এটাই আমাদের জীবনের শেষ
মুহূর্ত হতে পারে! শুধুমাত্র কিছু
অলৌকিক ঘটনা আমাদের
রক্ষা করতে পারে; অন্যথায় মৃত্যু
নিশ্চিত।
লোকটি হাসতে হাসতে তার
তলোয়ারটি খোলস থেকে বের করল।
মহিলাটি আরো আতঙ্কিত হয়ে পরল;
সে আসলে কি করতে যাচ্ছে?
তারপর সে তার
খোলা তলোয়ারটি তার স্ত্রীর প্রায়
গলাকে স্পর্শ করে ধরে রাখল...
সে বলল, “তুমি কি ভয় পাচ্ছ?”
তার স্ত্রী হাসতে শুরু করল আর বলল,
“আমি কেন ভয় পাব?
তলোয়ারটিতো আপনার হাতে, কেন
আমি ভয় পাব?
আমি জানি যে আপনি আমাকে আনেক
ভালবাসেন।”
“সে তলোয়ারটি খোলসের ভিতর
রাখতে রাখতে বলল, “তুমি আমার
উত্তর পেয়েগেছ” আমি জানি আল্লাহ
আমাদের ভালবাসেন, এবং ঝড় তাঁরই
হাতে।
তাই যাহা-কিছুই হতে যাচ্ছে ভালই
হবে। যদি আমরা বেঁচে থাকি, ভালো;
আর না বাচলেও, ভালো; কারণ সবকিছু
তাঁর হাতে এবং তিনি কোন ভুল কিছু
করতে পারেন না।
★সৃষ্টিকর্তার
প্রতি বিশ্বাস বৃদ্ধি করো এবং তাঁর
প্রতি বিশ্বাস রেখো যিনি তোমার
জীবনকে পুরো বদলে দিতে সক্ষম।
সবকিছুই কোন একটি কারণেই ঘটে।
সংগ্রহীত

Sunday 3 January 2016

Saturday 2 January 2016

মা-বাবার ভালবাসা 
একদিন ১৪ বছরের এক মেয়ে তার
বাবার কাছে গিয়ে বলল,
মেয়েঃ বাবা আমার ১৫তম
জন্মদিনে তুমি আমাকে কি উপহার
দিবে?
বাবা মুচকি হেসে বললেন,
বাবাঃ এখনও তো অনেক সময় আছে।
আর সময় হলেই তুমি তোমার
জন্মদিনের উপহার পেয়ে যাবে।
বেশ কিছুদিন যাবার পর একদিন হঠাত্
করেই মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে
যায়।বাসার সবাই বেশ অস্থির হয়ে
পড়ে।কিছু করতে না পেরে
মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে
যায়।হাসপাতালে ডাক্তার অনেক
পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর তার
বাবাকে বলে, "আপনার মেয়ের
হার্টে একটি ফুটো ধরা পড়েছে।
এখন যদি খুব তাড়াতাড়ি হার্ট
পরিবর্তন না করা যায় তবে হয়তো
আপনার মেয়েকে আর বাঁচানো
সম্ভব হবে না।
বাবা এ কথা শুনে কান্নায়
ভেঙ্গে পড়ে।একটি মাত্র মেয়ে
আর সে চলে যাবে তাদের ছেড়ে?এ
কিছুতেই হতে দিবে না সে।
বাবা একবার মেয়েটির রুমে গেল
দেখল তার মেয়েটি বিছানায়
শুয়ে আছে।বাবা কাছে যেতেই
মেয়ে বলল,
মেয়েঃ বাবা আমি মনে হয় আর
বাঁচব না।
বাবা চোখের পানি মুছে
বাবাঃ কে বলছে মা তুমি বাঁচবে
না!!তুমি খুব শীগ্রই ভাল হয়ে
যাবে।
মেয়েঃ তুমি কি করে জানলে?
ডাক্তার তো বলেছে আমার হার্টে
একটি রোগ হয়েছে আর আমাকে
বাঁচানো সম্ভব না।
বাবাঃ না, মা তোমার কিচ্ছু হবে
না । থেকো তুমি ভাল হয়ে যাবে।
এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর
মেয়েটি সম্পুর্ন সুস্থ্য হয়ে
বাসায় ফিরে।বাড়িতে ফিরে সে
বাবাকে খুঁজতে থাকে। না
পেয়ে মায়ের কাছে যায়।মা
বললেনঃ তোমার টেবিলে দেখ একটি
চিঁঠি রাখা আছে তোমার জন্য।
মেয়েটি দৌড়ে তার ঘরে গিয়ে
চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু
করল,
প্রিয় মা
আমি জানি যেদিন তুমি এ চিঠিটা
পড়বে সেদিন তুমি সম্পূর্ন সুস্থ
হয়ে যাবে।সব কিছু ঠিক আগের মতো
হয়ে যাবে।যেমনটা আমি তোমাকে
বলেছিলাম। আমি বলেছিলাম না
তোমার কিচ্ছু হবে না দেখছ তাই
হয়েছে।
তুমি আমার কাছে তোমার ১৫তম
জন্মদিনে উপহার চেয়েছিলে না?
অনেক ভেবেছি কিন্তু তোমাকে
কি উপহার দিব ভেবে পাচ্ছিলাম
না।তোমার অসুস্থতায় যখন
ডাক্তার একটি হার্ট খুজছিল তখন
মনে হল আমার হার্ট ই ছিল একমাত্র
শ্রেষ্ঠ উপহার যা আমি তোমাকে
দিয়ে গেলাম।
মা আমার ,মন খারাপ কর না।আমি
আকাশের ঐ উপর থেকে তোমাকে
দেখব।তুমি আমার জন্য দোআ করো
কেমন।
ইতি
তোমার বাবা
.............................
সত্যিই বাবা মায়ের ভালবাসাটাই
জীবনে শ্রেষ্ঠ্য ভালবাসা যা আর
কেউই দিতে পারবে না।

Friday 1 January 2016

***হাদীস পড়ুন সুন্দর জীবন গড়ুন***
আত্মমূল্যায়ণ
একদিন এক ছোট্ট ছেলে পাড়ার ঔষধ দোকানে গিয়ে একটি বাক্স টেনে আনল দোকানের টেলিফোনটি নাগাল পাওয়ার জন্য। তারপর সে বাক্সটির উপর উঠে দাঁড়াল এবং টেলিফোনটি হাতে নিয়ে একটি নাম্বারে ডায়াল করল।

দোকানদার ঘটনাটি লক্ষ্য করল এবং কথোপকথনটি শোনার চেষ্টা করলঃ

ছেলেঃ জনাবা, আপনি কি আমাকে আপনার বাগানের ঘাস কাটার কাজটি দিতে পারবেন?

মহিলাঃ (ফোনের অন্য পাশ থেকে) ইতোমধ্যে বাগানের ঘাস কাটার জন্য একজন কর্মচারী আছে।

ছেলেঃ জনাবা, যে এখন আপনার বাগানের ঘাস কাটে আমি তার চেয়ে অর্ধেক দামে কেটে দিব।

মহিলাঃ যে এখন আমার বাগানের ঘাস কাটে, আমি তার কাজে খুবই সন্তুষ্ট।

ছেলেঃ (আরও বেশি আন্তরিকতার সাথে) জনাবা, আমি আপনার উঠান এবং বাড়ির চারপাশও ঝাড়ু দিয়ে দিব। ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন আপনি সবচেয়ে গোছানো বাড়িটি পাবেন।

মহিলাঃ থাক, ধন্যবাদ।

মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে ছেলেটি টেলিফোন নামিয়ে রাখল। দোকানমালিক, যিনি ঘটনাটি দেখছিলেন, তাড়াতাড়ি ছেলেটির কাছে ছুটে গেলেন।

দোকানমালিকঃ বাবা, তোমার দৃষ্টিভঙ্গী আমার খুব পছন্দ হয়েছে; তোমার ইতিবাচক মনোভাব আমার ভাল লেগেছে এবং আমি তোমাকে একটি কাজ দিতে চাই।

ছেলেঃ থাক, ধন্যবাদ।

দোকানমালিকঃ কিন্তু তুমি তো চাকরিটি পাওয়ার জন্য খুব চেষ্টা করছিলে।

ছেলেঃ না জনাব, আমি শুধু আমার কাজর কতটা ভাল হচ্ছে তা মূল্যায়ণ করছিলাম। আমিই সে লোক যে ঐ মহিলার বাগানে কাজ করি।

এটাকেই বলা হয় আত্মমূল্যায়ণ, যা আপনাকে আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে উৎসাহিত করে এবং আপনার দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দেয়।

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,

“যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিদান পাবে এবং সেদিন তারা গুরুতর অস্থিরতা থেকে নিরাপদ থাকবে।”
[সূরা আন-নামলঃ ৮৮]